সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অযোধ্যার রামমন্দির বোমা মেরে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন 'শিখস ফর জাস্টিসে'র প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুন। এই কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গিকেই দেখা যায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নানা বিতর্ক হয়। কয়েকদিন আগে ব্রিটেনে গিয়ে খলিস্তানিদের হামলার মুখে পড়েন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। সেই ঘটনাতেও পান্নুনের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান অনেকে। এই পরিস্থিতিতে পান্নুনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গাবার্ডের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।

আড়াই দিনের ভারতে সফরে এসেছেন তুলসী। সোমবার তিনি বৈঠকে বসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে। এই আলোচনায় পান্নুনকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজনাথ। উল্লেখ্য, এই কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গিকে নিয়ে সম্প্রতি ভারতের ও আমেরিকার মধ্যে চাপানউতোর বেড়েছিল। গত বছরের প্রাক্তন বিকাশ যাদব নামে এক প্রাক্তন ‘র’ আধিকারিককে পান্নুন খুনের চেষ্টায় অভিযুক্ত হিসাবে ঘোষণা করে আমেরিকা। পাশাপাশি একই অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় নিখিল গুপ্তা নামে এক ভারতীয় ব্যবসায়ীকে। এরপর পান্নুনেরই দায়ের করা মামলায় ভারত সরকারকে সমন পাঠায় আমেরিকার আদালত। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকেও সমন পাঠানো হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক করার আগে তুলসী দেখা করেন ডোভালের সঙ্গে।
বলে রাখা ভালো, ভারতে বহুবার হামলার ছক কষেছে পান্নুন। ২০১৯ সাল থেকে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর নজরে ছিল সে। এরপর ২০২০ সালের ১ জুলাই পান্নুনকে জঙ্গি তকমা দেয় ভারত। নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় তার সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসকেও। কিন্তু তাতেও থামেনি এই খলিস্তানি জঙ্গি। গত বছর রামমন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি একাধিকবার ভারতীয় বিমান উড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় সে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও তুলসীর পরিচয় বহুদিনের। আমেরিকার অনুষ্ঠিত ‘হাউডি মোদি ‘ অনুষ্ঠানের সময় নমোর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তুলসীর। মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ছবি হাতিয়ার করে দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমেরিকার একটি মহল ও বেশ কিছু সংবাদপত্র তুলসীকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ বলেও কটাক্ষ করে। কিন্তু কোনও কটাক্ষকেই আমল দেননি তুলসী। মোদির 'বন্ধু' হিসাবেই তিনি পরিচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এবার আমেরিকার গোয়েন্দা প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন তুলসী। তাই তিনি যাতে সমস্ত প্রমাণ-সহ পান্নুনের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করেন সেটাই চায় ভারত। পাশাপাশি তুলসীর সাহায্যে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোকেও বাগে আনতে চায় দিল্লি।