সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় মুদ্রার (Indian Rupee) রক্তক্ষরণ অব্যাহত। এবার মার্কিন ডলারের দাম পেরিয়ে গেল ৮২ টাকা। শুক্রবার সকালে বাজার খুলতেই ৩৩ পয়সা পড়ে যায় টাকার দাম। শতকরা হিসাবে সেটা ০.৪১ শতাংশ। এই বিরাট পতনের ফলে টাকার নতুন দাম দাঁড়ায় ৮২ টাকা ২২ পয়সা। কমতে কমতে একটা সময় ডলারের তুলনায় টাকার দাম দাঁড়ায় ৮২ টাকা ৩৩ পয়সা। এই প্রথমবার ৮২ টাকা পেরল ভারতীয় মুদ্রার দাম।
অপরিশোধিত তেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার আশঙ্কা, বিদেশি বিনিয়োগের অভাবের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক কারণেই টাকার মূল্যে রেকর্ড পতন বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। পরিসংখ্যান বলছে, শুধু চলতি বছরেই টাকার দাম ১০.৬ শতাংশ কমে গিয়েছে। গত ৮ বছরে এই পতনের অঙ্কটা ২৫ শতাংশের বেশি। রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর এক ডলারের (Dollar) দাম ছিল ৬৩ টাকা ৩৩ পয়সা। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০১৯ সালের শেষদিনে দেখা যায় ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম ৭০-র গণ্ডি ছাড়ায়। করোনা কালের পর এই বিনিময় মূল্য সত্তর টাকার আশপাশে ছিল। কিন্তু কয়েক মাস ধরেই মন্দা ভারতীয় মুদ্রা বাজারে। ক্রমশ পড়ছে ভারতীয় মুদ্রার দাম। যা অর্থনীতির জন্য বড়সড় উদ্বেগের খবর।
[আরও পড়ুন: ভারতীয় কফ সিরাপ খেয়ে আফ্রিকায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু! ভারতে বিক্রি হয় না, জানাল সরকার]
উদ্বেগের অবশ্য এখানেই শেষ নয়। আরও দুঃসংবাদ রয়েছে অর্থনীতির বাজারে। পরিষেবা ক্ষেত্রে দেশের বৃদ্ধির হার গত ছ’মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অঙ্কে নেমে গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। মুদ্রাস্ফীতি (Inflation), প্রতিযোগিতা এবং জনমুখী নয় এমন কিছু নীতির কারণেই বৃদ্ধির গত রোধ হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। গত মার্চের পর এত নিচে বৃদ্ধির গতি আর আসেনি। গ্লোবাল ইন্ডিয়া সার্ভিস পারচেজ ম্যানেজার ইনডেক্স-এর সূচকেই এই পরিসংখ্যান ধরা পড়েছে। গত আগস্টে এই সূচক ছিল ৫৭.২ অঙ্কে। সেপ্টেম্বরে তা নেমে দাঁড়ায় ৫৪.৩-এ। আগস্ট মাসেই দেশে কর্মসংস্থানে জোয়ার আসছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গতি রোধ হওয়ায় কর্মসংস্থানেও টান পড়েছে।
[আরও পড়ুন: কর্ণাটকে হেরিটেজ তকমা পাওয়া মাদ্রাসা জবরদখল করে পুজো হিন্দুত্ববাদীরা! ভাইরাল ভিডিও]
এদিকে, বিশ্ব ব্যাংক (World Bank) ২০২২-’২৩ অর্থবছরের জন্য ভারতীয় অর্থনীতির জন্য ৬.৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধির পূর্বাভাস করেছে। যা জুনে পূর্বাভাসের থেকে এক শতাংশ কম। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কের বার্ষিক বৈঠকের আগে প্রকাশিত তার সর্বশেষ দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক ফোকাসে অবশ্য উল্লেখ করেছে যে, ভারত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় শক্তিশালী হয়ে উঠছে।