সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রায়ান ইন্ট্যারন্যাশনাল স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র প্রদ্যুম্ন ঠাকুরের হত্যাকারীকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিবেচনা করা হবে। একাদশ শ্রেণির ওই খুনি ছাত্রকে নাবালক হিসেবে আদালতে তোলা হয়েছিল। তা সাব্যস্ত হলে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের আওতায় তার বিচার হত। সেক্ষেত্রে সাজা অনেক কম হত। কিন্তু বুধবার এই তত্ত্ব খারিজ করেছে বোর্ড। মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা ও দায়রা আদালতে।
[ জয়ললিতার মৃত্যু ঘিরে ফের বিতর্ক, ফাঁস হওয়া ভিডিওতে ঘনাল রহস্য ]
স্কুলের টয়লেটেই খুন হয় দ্বিতীয় শ্রেণির প্রদ্যুম্ন। আকস্মিক এই ঘটনা মেনে নিতে পারেনি তার মা-বাবা। প্রাথমিকভাবে স্কুলের বাস কন্ডাক্টরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যৌনতার গল্পও সামনে আনা হয়। কিন্তু প্রদ্যুম্নর অভিভাবকরা বরাবার বলতে চেয়েছিলেন, কোথাও বড় কিছু লুকিয়ে থাকছে। ফলে সিবিআই তদন্তের দাবি করেন তাঁরা। যদিও তা না করতে নেতা-মন্ত্রী এমনকী পুলিশের তরফেও চাপ আসে তাঁর কাছে। তবু নতিস্বীকার করেননি তাঁরা। সিবিআই তদন্তেই উঠে আসে, খুনি কন্ডাক্টর অশোক কুমার নয়। বরং স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। পরীক্ষা ও অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠক পিছিয়ে দিতে সে অশান্তি বাধাতে চেয়েছিল। তাই প্রদ্যুম্নকে সামনে পেয়ে তার গলা চিরে দেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখে স্কুলের বাকিদের খবর দিয়েছিল ওই ছেলেটিই। বলা যায়, একেবারে ঠান্ডা মাথার খুনি ওই ছাত্র। রীতিমতো দোকান থেকে ছুরি কিনে দিনের পর দিন সে টয়েলেটে ওঁত পেতে থাকত। প্রদ্যুম্নর জায়গায় অন্য যে কেউ থাকলেই সে খুন হতে পারত।
[ বিরাটের দেশপ্রেম নিয়ে খোঁচা দিয়ে দলেই ভর্ৎসনার মুখে বিজেপি নেতা ]
এদিকে প্রভাবশালীর পুত্রকে বাঁচাতে পুলিশ ফাঁসিয়ে দেয় কন্ডাক্টরকে। অকথ্য নির্যাতন করে তার থেকে বয়ান আদায় করা হয়। সিবিআই তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। উলটে চার পুলিশকর্মীই পড়ে সিবিআই স্ক্যানারে। জামিনে মুক্ত হন ওই কন্ডাক্টর। অন্যদিকে দোষী সাব্যস্ত হয় প্রভাবশালী পুত্র। কিন্তু ১৬ বছরের এই পড়ুয়াকে নাবালক হিসেবেই গণ্য করার দাবি তুলেচিল অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী। প্রদ্যুম্নর অভিভাবকের দাবি ছিল, যেরকম ঠান্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে তাতে, কোনওভাবেই সে নাবালক হতে পারে না। এদিন এই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিল জুভেনাইল বোর্ড। মামলা স্থানান্থরিত করা হল জেলা ও দায়রা আদালতে। ফলে নাবালক অপরাধীর সুবিধা পাবে না সে। খুনের দায়ে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্ধারিত সাজাই ধার্য হবে তার জন্য। এবং বিচারপ্রক্রিয়াও চলবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক খুনির কথা মাথায় রেখেই।
[ ঋতুমতী হলেই ভক্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক, ফের কাঠগড়ায় স্বঘোষিত ধর্মগুরু ]
এদিন এই সিদ্ধান্তের পর প্রদ্যুম্নর বাবা জানিয়েছেন, বিচারব্যবস্থার কাছে তাঁরা কৃতজ্ঞ। লড়াই শক্ত হবে তা তাঁরা জানতেন। কিন্তু এর শেষ দেখেই ছাড়তে চান তিনি। তাঁর ছেলের হত্যার সুবিচার যেন হবে, তেমনই বাকিদের ক্ষেত্রেও যাতে কোনও অবিচার না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই লড়াই চালাবেন তিনি।
The post নাবালক তত্ত্ব খারিজ, প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবেই বিচার প্রদ্যুম্নর হত্যাকারীর appeared first on Sangbad Pratidin.