সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হস্টেলে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বিদ্রোহী’ ছাত্রছাত্রীদের জন্য এবার শাস্তি দিতে চায় কর্তৃপক্ষ। যেসব পড়ুয়ারা প্রতিবাদ করে পরীক্ষা বয়কট করছে কিংবা ক্লাসে উপস্থিত না থেকে বিক্ষোভে বেশি শামিল হচ্ছে, তারা পরের সেমেস্টারে বসতে পারবে না। এমনই ঘোষণা করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে।
জেএনইউ-তে সেমেস্টার ভিত্তিতে পরীক্ষা হলেও, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার মূল্যায়ণ আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। বাড়ির কাজ, প্রজেক্ট, কুইজে অংশগ্রহণ, দলগত পারফরম্যান্সের দিকেও সারাবছর ধরে নজর রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের নিয়মাবলির মধ্যেই রয়েছে এসব। কিন্তু হস্টেলের ফি প্রায় তিনগুণ বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদ শুরু করেছে পড়ুয়াদের একটা বড় অংশই। ক্লাস তো বটেই, সমাবর্তন বয়কট করে, পরীক্ষার খাতায় উত্তর না লিখে প্রতিবাদের পথে হেঁটেছেন। এমনকী আলোচনার মাধ্যমে তাদের দাবি পূরণ নিয়ে সমাধানের রাস্তা বের করার চেষ্টা করেছিল খোদ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকও। কিন্তু সুরাহা হয়নি কিছুই।
[আরও পড়ুন: গতবারের ‘বয়কট’ বিতর্কের জের, জাতীয় পুরস্কার অনুষ্ঠানে থাকছেন না রাষ্ট্রপতি]
এই পরিস্থিতিতে এবার আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ”পাঠ্যসূচি মেনে নিয়মিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু যারা পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখছে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, তারা পরবর্তী সেমেস্টারেও বসতে পারবে না। যদি ক্লাসে যথাযথ উপস্থিতি না থাকে, এবং পড়াশোনায় কোনওরকম গাফিলতি ধরা পড়ে, তাহলে তো সেমেস্টারে বসার যোগ্যতাই হারাবে। বারবার সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।” তাদের আরও অভিযোগ, অনেক পড়ুয়াই আছে, যারা কোনও আন্দোলন-বিক্ষোভে অংশ না নিয়ে মন দিয়ে পড়াশোনা করতে চায়, তাদেরকেও সুষ্ঠুভাবে তা করার সুযোগ দিচ্ছে না প্রতিবাদীরা। এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্কুলস-সহ শীর্ষকর্তাদের একাংশ চায়, পড়ুয়ারা যাতে বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দিতে পারে, তার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ বা ইমেলে প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হোক। এই সিদ্ধান্তেরও কঠোর বিরোধিতা করেছেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তাদের পালটা দাবি, পরীক্ষা নেওয়ার এই প্রক্রিয়া ‘হাস্যকর’।
পরীক্ষার ব্যাপারে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ম অত্যন্ত কঠোরভাবে পালন করা হয়। গত দু, তিন বছর আগে ছাত্র সংগঠনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তথা মেধাবী পিএইচডি ছাত্র কানহাইয়া কুমার, উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্যরা ‘দেশদ্রোহিতা’ মামলায় জড়িয়ে পড়ার ফলে তাঁদের ক্ষুরধার মেধা এবং সময় মেনে গবেষণাপত্র জমা দেওয়া সত্ত্বেও তা প্রথমে আটকে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য পারফরম্যান্সের নিরিখে সবাইকেই নিজেদের কাজ এগোনোর সম্মতি দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এবার প্রতিবাদীদের প্রতি এমন কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ বোঝাতে চায়, পড়াশোনা এবং নিয়মানুবর্তিতার সঙ্গে কোনওরকম আপোষে রাজি নয় দেশের পয়লা নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
[আরও পড়ুন: ‘সংস্কৃত শ্লোক শেখালেই কমবে ধর্ষণ’, আজব নিদান মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের]
The post আন্দোলন করলে সেমেস্টারে বসা যাবে না, প্রতিবাদের ‘শাস্তি’ ঘোষণা JNU-এর appeared first on Sangbad Pratidin.