সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্র এবং শীর্ষ আদালতের যে মতানৈক্য শুরু হয়েছিল, সেটা এবার বিবাদে পরিণত হওয়ার জোগাড়। কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে বিচারপতি নিয়োগের যে পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তাতে আপত্তি জানিয়ে প্রায় নিয়মিত কোনও না কোনও বয়ান দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তাতেই প্রবল আপত্তি শীর্ষ আদালতের। শুধু তাই নয়। সুপ্রিম কোর্টের অভিযোগ, কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে ঢিলেমি করছে কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের বিচারপতিদের নিয়োগের দায়িত্ব কলেজিয়ামের (Collegium)। তবে তাদের সুপারিশ সত্ত্বেও আপত্তি জানিয়ে কোনও কোনও নাম পুনর্বিবেচনার জন্য কলেজিয়ামে ফেরত পাঠাতে পারে কেন্দ্র। কিন্তু পুনর্বিবেচনার পর কলেজিয়াম যদি ফের সেই নামগুলিই পাঠায়, তাহলে কেন্দ্র তা মানতে বাধ্য। এই নিয়মেই সম্প্রতি আপত্তি জানিয়েছেন কেন্দ্রের আইনমন্ত্রী। কিরেণ রিজিজু (Kiren Rijiju) সম্প্রতি বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে এক সংবা মাধ্যমে বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম পদ্ধতি সংবিধান বহির্ভূত। কলেজিয়াম ত্রুটিপূর্ণ। একেবারেই স্বচ্ছ নয়। কলেজিয়ামের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যেতে পারে।”
[আরও পড়ুন: নাবালকের রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগে প্রেমিকার বাড়িতে ভাঙচুর, মগরায় জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ]
আইনমন্ত্রীর এই মন্তব্যে এবার এজলাস থেকে প্রবল আপত্তি জানাল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার বিচারপতি এসকে কৌল এবং বিচারপতি এএস ওকার ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেছেন, বিচারবিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা হতাশাজনক। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিল, সেটা কেন্দ্রকে মেনে চলতে হবে। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি কিরেণ রিজিজুর মন্তব্য নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ,”সংবাদমাধ্যমের বহু রিপোর্ট উপেক্ষা করা হলেও এটা একেবারে প্রশাসনের শীর্ষস্তর থেকে আসছে। আর কিছু বলতে চাই না। আমরা এ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। কিন্তু যদি আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তাহলে কঠোর সিদ্ধান্তই নেব।”
[আরও পড়ুন: অনলাইন কেনাকাটির ফাঁদে পড়ে সাফ অ্যাকাউন্ট, স্কলারশিপের টাকা খোয়ালেন PhD ছাত্রী]
কেন্দ্র ও বিচারবিভাগের মধ্যে কলেজিয়াম নিয়ে টানাপড়েন অনেক দিনের। গত বছরের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়ে দিয়েছিল, কলেজিয়ামের সুপারিশ পাওয়ার তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যেই বিচারপতিদের নিয়োগ করাটাই দস্তুর। কিন্তু সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে শীর্ষ আদালত। এর আগে একাধিক প্রধান বিচারপতি এ নিয়ে কেন্দ্রের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন।