সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেহব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক শব্দ আর ব্যবহার করা যাবে না আদালতে। মহিলাদের পক্ষে অসম্মানজনক শব্দও আদালতে উল্লেখ করা যাবে না। আইনি ভাষার ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে নয়া পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। বুধবার নতুন হ্যান্ডবুক প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, আগে বহুবার সুপ্রিম কোর্টে এই শব্দগুলি মহিলাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৪০টি শব্দ উল্লেখ করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
নিষিদ্ধের তালিকায় রয়েছে prostitute, whore,mistress, hooker-এর মতো দেহব্যবসার সঙ্গে জড়িত শব্দ। তাছাড়াও যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের ক্ষেত্রেও মহিলাদের অসম্মানজনক শব্দ উল্লেখ করা যাবে না। কোনও মহিলার সতীত্বের বিবরণও দেওয়া যাবে না আদালতে। কোনও মহিলাকে ভারতীয় বা পশ্চিমি হিসাবে আলাদা করে অভিহিত করা যাবে না, সকলকেই শুধুমাত্র মহিলা বলে সম্বোধন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে প্রকাশিত নতুন হ্যান্ডবুকে এমন ৪০টি শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলি বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে ব্যবহৃত হবে না। সেখানে রয়েছে পরকীয়া, মেয়েলি, বাধ্য স্ত্রী, হরমোনাল শব্দগুলি।
[আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের আবহেই পুণেতে উঠল ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান, গ্রেপ্তার ২]
বুধবার এই হ্যান্ডবুক প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। গত মার্চ মাসেই লিঙ্গবৈষম্য়মূলক শব্দের ব্যবহার নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। নতুন হ্যান্ডবুক প্রকাশ করে চন্দ্রচূড় বলেন, “এই শব্দগুলি একেবারেই অনৈতিক। মহিলাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে। যেকোনও সাধারণ মানুষের মতোই বিচারকরাও নিজেদের অজান্তেই লিঙ্গবৈষম্যমূলক শব্দ ব্যবহার করে ফেলেন। কিন্তু সেই ভুলের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থাকতে পারে।”
তবে প্রধান বিচারপতি জানান, পূর্ববর্তী বিচারপ্রক্রিয়া বা তার রায়ের বিচার করা এই হ্যান্ডবুকের উদ্দেশ্য নয়। দীর্ঘদিন ধরে বিচারপ্রক্রিয়ায় যেভাবে লিঙ্গবৈষম্যমূলক শব্দ ব্যবহার হয়েছে, সেটাই তুলে ধরবে এই হ্যান্ডবুক। বিচারপতিরা যদি সঠিক বিচারও করেন, তাহলেও তাঁদের শব্দপ্রয়োগের কারণে সমাজে লিঙ্গবৈষম্য ছড়াতে পারে।