সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অরণ্য ধ্বংস করে নগরজীবনের উন্নয়নের স্বার্থে হায়দরাবাদের জঙ্গলে শুরু হয়েছিল বুলডোজার চালানো। তাতে যে কী পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে সামগ্রিক পরিবেশ, তা বুঝেও বুঝতে চাননি কেউ। একমাত্র রুখে দাঁড়িয়েছিল হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বনাঞ্চল সাফ করার বন্ধের দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। এই প্রতিরোধ বস্তুত কোনও কাজেই আসেনি। তবে শেষমেশ ধাক্কা দিল ময়ূরের কান্না। জঙ্গল কেটে ফেলায় বাসভূমি থেকে উচ্ছেদ হয়ে সে কী কান্না ময়ূরদের! সোশাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হতেই সুপ্রিম কোর্ট জঙ্গল কাটায় স্থগিতাদেশ দিল। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওখানে কোনও কাজ করা যাবে না। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে অন্তত কিছুদিনের জন্য স্বস্তিতে বন্যপ্রাণীর দল।
সমস্যার শুরু সপ্তাহখানেক আগে। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অনতিদূরে ৪০০ একর কাঞ্চা গাছিবৌলি এলাকার জমি কাটা শুরু হয়। এই এলাকায় প্রচুর জীববৈচিত্র্য রয়েছে। তা ধ্বংস করা হলে সেই বৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে রুখে দাঁড়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। ওই এলাকাকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও ওঠে। বুধবার এনিয়ে আন্দোলনে নামলে তেলেঙ্গানা পুলিশ পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জ করে। এনিয়ে সোশাল মিডিয়া নিন্দায় সরব হন সেলিব্রিটিরাও। তেলেঙ্গানা সরকার পালটা যুক্তি হিসেবে জানায়, হায়দরাবাদের অনেক জায়গাতেই সাপ, ময়ূর রয়েছে। কিন্তু সবকিছুকে বনাঞ্চল বলা যায় না।
কিন্তু সমস্ত যুক্তি-তর্কের বাঁধ ভেঙে দিয়েছিল বাস্তুহারা ময়ূরদের ক্রন্দন! জঙ্গলের আলো, বুলডোজার শব্দ ছাপিয়ে গিয়েছিল সেই কান্না। আর তাতেই সম্ভবত অরণ্য ধ্বংস রোধের গুরুত্ব বুঝেছে দেশের শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার এই জঙ্গল কাটায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। তেলেঙ্গানা সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কী এমন দরকার পড়ল, যাতে ৪০০ একর জমির গাছ এত দ্রুত কেটে ফেলতে হচ্ছে? শীর্ষ আদালতে কী জবাব দেয় তেলেঙ্গানা সরকার, সেদিকেই নজর। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট অরণ্যচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর আশ্বস্ত হয়ে অনশন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরেছেন পড়ুয়ারা।