সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পালটু কুমার। বিহার রাজনীতির অন্দরে এটাই এখন নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) নতুন নাম। দিন কয়েক ধরেই জল্পনা চলছে, আরজেডি-কংগ্রেসের জোট ভেঙে বেরিয়ে আসতে চাইছেন বিহারের (Bihar) মুখ্যমন্ত্রী। পুরনো জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাবে নীতীশের জেডিইউ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তবে ভারতীয় রাজনীতিতে দলবদলের সঙ্গে কার্যত সমার্থক নীতীশ কুমারের নাম। অতীতে একাধিকবার জোট সঙ্গী পালটে নিজের মুখ্যমন্ত্রিত্বের কুর্সি ধরে রেখেছেন।
২০১৩ সাল থেকে নীতীশের দলবদলের পালা শুরু। বিজেপির (BJP) সঙ্গে জোট বেঁধে তখন বিহারে সরকার গড়েছে তাঁর জেডিইউ। কিন্তু সেই সময়েই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির নাম ঘোষণা করে বিজেপি। এই সিদ্ধান্তে একেবারে খুশি হতে পারেননি নীতীশ। ১৭ বছরের জোট ভেঙে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয় জেডিইউর। হারের দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়েন নীতীশ।
২০১৫ সালের নির্বাচনে ‘চরম শত্রু’ লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি আর কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে বিহারে সরকার গড়ে জেডিইউ (JDU)। নির্বাচনে সেভাবে সুবিধা করতে পারেনি নীতীশের দল। তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি তাঁকেই ছেড়ে দিয়েছিল আরজেডি। কিন্তু জোটের অন্দরেই অসন্তোষ ছিল, উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয় লালুপুত্র তেজস্বীকে। ধীরে ধীরে নানা ঘটনায় ফাটল ধরতে থাকে বিহারের মহাগটবন্ধনে।
[আরও পড়ুন: টি-৯০ ভীষ্ম থেকে অত্যাধুনিক রাফালে, দিল্লির রাজপথে ফুটল ‘সুপার পাওয়ার’ ভারতের ছবি]
২০১৭ সালে লালু, তেজস্বী-সহ যাদব পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের হতেই ফের পিঠ বাঁচাতে চেষ্টা করেন নীতীশ। জোট সরকার ভেঙে বেরিয়ে আসেন, ছেড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রীর পদও। কিন্তু কয়েকঘণ্টার মধ্যেই বিজেপির সহায়তায় ফের সরকার গড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে পড়েন। ২০২০ সালের বিহারের নির্বাচনে বিপুল সাফল্য় মেলে এনডিএ জোটের। কিন্তু বিজেপির চেয়ে অনেক কম আসন মেলে জেডিইউর কপালে।
২০২২ সালে ফের নীতীশের দলবদল। এনআরসি-সহ নানা ইস্যুতে বিজেপির সঙ্গে মত পার্থক্যের জেরে বেরিয়ে আসেন এনডিএ জোট থেকে। ফের বিহারে তৈরি হয় মহাজোট সরকার। বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটেও অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন নীতীশ। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগেই ফের দলবদলের ইঙ্গিত দিয়েছেন জেডিইউ প্রধান। সেরকমটা হলে দেড় বছরের মধ্যে ফের নতুন জোটে নতুন ভূমিকায় দেখা যেতে পারে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে।