নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সংসদের বাইরে যতই বিভেদ থাক না কেন, সংসদের অন্দরে এতদিন কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেই চলছিল তৃণমূল। কিন্তু সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সম্ভবত সেটাও হচ্ছে না। তৃণমূল সূত্রের খবর, সংসদ অধিবেশনের আগে কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠকেই হাজির থাকবে না তারা। যদিও নাম জানাতে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতা জানিয়েছেন, কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠকে হাজির না থাকলেও অধিবেশন কক্ষে তাঁরা হাত শিবিরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেই চলবেন।
আসলে, সংসদের বিগত দুটি অধিবেশনে বিরোধী ঐক্যে বেনজির নিদর্শন দেখা গিয়েছিল। তৃণমূল (Trinamool Congress ) এবং কংগ্রেস একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করেই চলছিল। এমনকী, কংগ্রেস নেতাদের ডাকা বৈঠকেও নিয়মিত হাজির থাকছিলেন তৃণমূলের নেতারা। প্রথম সারির নেতারা না হলেও কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকগুলিতে অন্তত একজন করে প্রতিনিধি পাঠাত তৃণমূল। কিন্তু এবার সম্ভবত সেটা হচ্ছে না। দলের তরফে জানা গেল, সংসদ অধিবেশন (Parliament Session) চলাকালীন কংগ্রেসের ডাকা কোনও বৈঠকে হাজির থাকা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। আগামী সোমবারই রাজ্যসভায় কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে সব বিরোধী দলকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন। সেই বৈঠকেও সম্ভবত গরহাজির থাকবে তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেসের দুর্বলতাই রসদ! রাজ্যে-রাজ্যে তৃণমূলের সংগঠন বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে আরও কারণ]
মূলত দলের গোয়া (AITC Goa) ইউনিটের আপত্তিতেই সংসদের অধিবেশনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটছে না তৃণমূল কংগ্রেস। আসলে এই মুহূর্তে গোয়াতে বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও লড়ছে তৃণমূল। তাই সেরাজ্যের নেতারা চাইছেন না সংসদের অধিবেশনে কংগ্রেস এবং তৃণমূল একমঞ্চে থাক। তাতে গোয়াবাসীর উদ্দেশে ভুল বার্তা যাবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। নাম জানাতে অনিচ্ছুক দলের এক নেতা জানাচ্ছিলেন,” দলের গোয়া ইউনিট চাইছে কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি কোনও বৈঠকে যেন আমরা না থাকি। কারণ গোয়ায় আমাদের কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও লড়তে হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: সংসদ অধিবেশনের শুরুতে আন্দোলনে মৃত কৃষকদের উদ্দেশে শোক প্রস্তাব আনার দাবি কংগ্রেসের]
বস্তুত, কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেশ কিছুদিন আগেই বেড়েছে। রাজ্যে রাজ্যে যেভাবে কংগ্রেসের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তৃণমূল বাড়ছে, তাতে প্রমাদ গুণছেন হাত শিবিরের অনেক নেতাই। তাঁরা অভিযোগ করছেন, এভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে আসলে বিজেপিরই (BJP) উপকার করছে তৃণমূল। যদিও, তৃণমূলের সাফ কথা, মমতা বাংলায় কীভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সেটা সকলেই জানেন। তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।