প্রণব সরকার, আগরতলা: ত্রিপুরায় বিজেপির পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত হলেন বিপ্লব দেব। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতীন গড়করি ও বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) রাম মাধবের উপস্থিতিতে পরিষদীয় নেতা নির্বাচিত হন বিপ্লব দেব। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন ৪৮ বছরের বিপ্লবই। তাঁর ডেপুটি হচ্ছেন প্রবীণ বিজেপি নেতা জিষ্ণু দেব বর্মন। সূত্রের খবর, শুক্রবার হতে পারে শপথগ্রহণ। সেদিন উপস্থিত থাকতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এছাড়াও দেশের অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও উপস্থিত থাকতে পারেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। আজ বৈঠক হবে জোটসঙ্গী আইপিএফটির সঙ্গে। বৈঠকের পরই মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের নাম চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। সুশাসনই লক্ষ্য, বৈঠকের পর জানান বিপ্লব দেব।
[বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হল লেনিনের মূর্তি, ত্রিপুরা জুড়ে আক্রান্ত বামেরা]
অন্যদিকে, নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে এনডিএ শরিক আইপিএফটি। মুখ্যমন্ত্রী পদ চাই। চাই মন্ত্রিসভায় সমান এবং সম্মানজনক প্রতিনিধিত্ব। এই দাবি করে বিজেপিকে যথেষ্ট চাপে ফেলে দিল ত্রিপুরা বিধানসভায় তাদের শরিক দল ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিএফটি)। আইপিএফটি হল উপজাতিদের দল। রাজ্যে নির্বাচনোত্তর সন্ত্রাস নিয়ে সিপিএমের সন্ত্রাস খারিজ করেছে বিজেপি। ২৫ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে জিতে ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি জোট। বড় শরিক বিজেপির কাছে ইনডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (আইপিএফটি) দাবি জানিয়েছে, নতুন সরকারে তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে, তাদের বিধায়কদের সম্মানজনক প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকী নতুন মুখ্যমন্ত্রীও উপজাতি বিধায়কদের থেকেই কাউকে করতে হবে। এই দাবিগুলি জানিয়েছেন আইএফটি-র সভাপতি এন সি দেববর্মা। যদিও যোগ্য সম্মান বলতে তিনি কী বোঝাতে চাইছেন, সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যাখ্যা করেননি তিনি। কিন্তু দেববর্মা সোমবার ঘোষণা করে দিয়েছেন, সম্মানজনক স্থান না পেলে বিজেপি সরকারকে তাঁরা বাইরে থেকে সমর্থন করবেন। ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় ভোট হওয়া ৫৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৫১টি আসনে লড়ে ৩৫টিতে জিতেছে। আইপিএফটি বাকি ৯টিতে লড়ে পেয়েছে ৮টি আসন। দেববর্মা বলেন, কোনও উপজাতি বিধায়ককে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে এখানকার ভূমিপুত্ররা ন্যায়বিচার পাবেন। ১৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ২০টি তফসিলি উপজাতি সংরক্ষিত আসনের ১৭টিই পেয়েছে বিজেপি জোট। কিন্তু বিজেপি যদি মুখ্যমন্ত্রী পদটি কোনও উপজাতি বিধায়ককে না দেয়, তাহলে কী হবে? তিন বলেন, সেক্ষেত্রে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে তারা। বরাবর স্বাধীন ত্রিপুরা রাষ্ট্রের দাবিদার এই সংগঠনটির সঙ্গে বিজেপির এবার জোট হয়েছে ন্যূনতম একক শর্তের ভিত্তিতে। সেখানে বড় শরিক বিজেপি পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, তারা পৃথক রাজ্যের দাবি মানবে না।
[বামপন্থা মুছে গেলে ভারতের সর্বনাশ হবে, ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য জয়রাম রমেশের]
এদিকে, স্ত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্যের বাড়িতেই থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব বাড়ি নেই। তাই তিনি স্থায়ীভাবে উঠবেন রাজধানী আগরতলার চৌমোহনিতে স্ত্রী পাঞ্চালি ভট্টাচার্যের নির্মীয়মাণ বাড়িতে। এটি মানিকবাবুর শ্বশুরবাড়ি। এদিকে, ভোটের বিপর্যয় নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছেন সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব। ডাকা হতে পারে জেলা নেতৃত্বকেও। থাকবেন সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাটও। হবে ভোটের ফল বিশ্লেষণ এবং আত্মসমালোচনা। এরইমধে্য রাজ্যে বিজেপি সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর।
[মেঘালয়ও হাতছাড়া কংগ্রেসের, সরকার গড়ছে এনপিপি-বিজেপি জোট]
The post বিপ্লব দেব নয় উপজাতি মুখ্যমন্ত্রী চাই, দাবিতে সরব বিজেপির শরিক IPFT appeared first on Sangbad Pratidin.