সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্র-রাজ্যের আর্থিক সংঘাতের মাঝে কিছুটা স্বস্তি। ঘনঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পড়া রাজ্যগুলির জন্য বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের অনুমোদন দিল অর্থমন্ত্রক। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। তাদের জন্য বিনা সুদে ঋণদানে সম্মত কেন্দ্র। শুক্রবার রাজস্থানে প্রাক বাজেট বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তাতে একাধিক বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁকে অনুরোধ জানান, বাংলার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়া রাজ্যকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হোক, যাতে পুনর্গঠনের কাজ খানিকটা সহজ হয়। তা মেনে নিয়ে সীতারমণ জানিয়েছেন, এই বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রতি রাজ্যের জন্য তা মঞ্জুর করা হবে।
বাংলায় একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনা-সহ একাধিক যৌথ প্রকল্পে বকেয়া অর্থ এখনও মেলেনি কেন্দ্রের তরফে। এই অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য একাধিক বৈঠক, চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিতে অনুরোধ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। কিন্তু কানাকড়িও জোটেনি রাজ্যের কোষাগারে। শুক্রবারের বৈঠকে নির্মলা সীতারমণের সামনে সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ওই বকেয়া অর্থ যাতে দ্রুত দেওয়া হয়, তার জন্য নির্দিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কেন্দ্রকে সক্রিয় হওয়ার আর্জি জানান তিনি। ওঠে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রসঙ্গও। রাজ্য সরকার বারবার অভিযোগ তুলেছে, অন্যান্য রাজ্যকে বিপর্যয় সামলাতে কেন্দ্র বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দিলেও বাংলার প্রতি বঞ্চনা করা হয়। আমফান, যশ, ফণী - কোনও ঘূর্ণিঝড়ের পরই কেন্দ্র সাহায্য করেনি। এদিন বৈঠকে সেই বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি তোলেন চন্দ্রিমা। বিভিন্ন রাজ্যের জন্য ৫০ বছরের জন্য বিনা সুদে যে ৫০ শতাংশ ঋণদানের ব্যবস্থা আছে, তা বাংলার জন্য চালু করার দাবি তুলেছেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তা অবশ্য মেনে নিয়ে নির্মলা জানান, প্রত্যেক বিপর্যস্ত রাজ্যেরই পুনর্গঠনে ওই প্যাকেজ পাওয়া উচিত। তিনি বিষয়টি দেখবেন।
এছাড়া আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি ওঠে বৈঠকে। কর্ণাটকের মন্ত্রীর এই দাবিতে সহমত পোষণ করেন চন্দ্রিমা। তিনি এও জানান, পশ্চিমবঙ্গে আশা বা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পারিশ্রমিক ধাপে ধাপে বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে কেন্দ্রের সহায়তা পেলে সেই কাজ আরও ভালোভাবে করা সম্ভব বলে উল্লেখ করেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। সবমিলিয়ে, প্রাক বাজেট বৈঠক মোটের উপর সন্তোষজনক হয়েছে বলেই চন্দ্রিমার বক্তব্যে স্পষ্ট।