সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রবল চাপে ড্রাগনের দেশ। আমেরিকার পর এবার ভারতকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ গড়তে ঝাঁপাচ্ছে জাপানও। শুধু ভারতই নয়, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াকেও এই কোটি কোটি ডলারের প্রকল্পে শামিল করতে চায় জাপান। এই বিষয়ে দ্রুতই নয়াদিল্লির সঙ্গে কৌশলগত আলোচনা সেরে ফেলতে চায় টোকিও। এই প্রকল্পের অধীনে এশিয়া থেকে শুরু করে সুদূর আফ্রিকা পর্যন্ত দ্রুতগামী পণ্য পরিবহণযোগ্য সড়ক ও বন্দর গড়ে তোলা হবে। চিনের ড্রিম প্রজেক্ট ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের পালটা এই আন্তর্মহাদেশীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায় জাপান। ব্রিটেন ও ফ্রান্সও এই প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছে।
[চিনকে রুখতে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প OBOR গড়বে আমেরিকা]
জাপ প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আসন্ন ৬ নভেম্বর এই প্রকল্পের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানাতে চলেছেন। তারপরই চার দেশ একত্রে আলোচনার টেবিলে বসবে। বৃহস্পতিবার বিদেশমন্ত্রী টারো কানো এই কথা জানিয়েছেন। জাপানের এই প্রকল্পে শামিল হলে আখেরে লাভ ভারতেরই। একাধিক মহাদেশকে সংযোগকারী এই সড়ক ও বন্দর প্রকল্পের শরিক হলে চিনকে প্রবল চাপে রাখতে পারবে ভারত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের খুব কাছ দিয়ে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পের অধীনে রাস্তা বানাচ্ছে চিন। ভারত বরাবরই ওই প্রকল্পের বিরোধী। তাই চিন-বিরোধী জাপান ও আমেরিকার সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে শরিক হলে ভারতের স্বার্থই যে আখেরে সুরক্ষিত হবে, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
জাপানের তরফে এই প্রস্তাব আসার মাত্র ২৪ ঘন্টা আগেই আমেরিকাও একই প্রস্তাব পেশ করেছে নয়াদিল্লির কাছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেট রেক্স টিলারসন। নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের যৌথ উদ্যোগে গোটা দক্ষিণ এশিয়া থেকে শুরু করে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ব্যাপক সড়ক যোগাযোগ ও বন্দর গড়ে উঠবে। আমেরিকা আবার চায় বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকেও এই প্রকল্পে শামিল করতে। সেক্ষেত্রে ভৌগলিক কারণে পাকিস্তান বাধ্য হবে এই প্রকল্পে সবুজ সঙ্কেত দিতে। আর এবার জাপানও চায় চিনের দাদাগিরি রুখে দিয়ে বিকল্প OBOR প্রকল্প গড়ে তুলতে। ইতিমধ্যেই টিলারসন ও অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে একদফা আলোচনা সেরে ফেলেছেন জাপ বিদেশমন্ত্রী। ব্রিটেন ও ফ্রান্সও এই প্রকল্পে শামিল হতে পারে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ-পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া থেকে শুরু করে মধ্য প্রাচ্য ও আফ্রিকাতেও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা ও সমুদ্রবন্দর এই গোষ্ঠীবদ্ধ দেশগুলি স্বাধীনভাবে ব্যবহারের সুযোগ পাবে। ভেঙে যাবে চিনের ‘বিষদাঁত’। কানো তো বলছেনই, ‘বড় স্বপ্ন দেখছে জাপান। একসঙ্গে মিত্র দেশগুলিকে নিয়ে মুক্ত বাণিজ্য, উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও স্বাধীনভাবে সমুদ্রপথ ব্যবহার করার স্বপ্ন দেখছি আমরা।’ চিন তাদের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পে বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে মুক্ত বাণিজ্যের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে চায়। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই প্রকল্পকে চলতি সপ্তাহেই সে দেশের শাসক কমিউনিস্ট পার্টির সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। যার অর্থ, ‘সিল্ড রোড’-কে বাস্তবায়িত করতে এবার সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে ড্রাগন।
[ফের ডোকলামে রাস্তা বানাচ্ছে বেজিং, মোতায়েন চিনা সেনাও]
The post আমেরিকার পর এবার ভারতকে নিয়ে বিকল্প OBOR গড়তে চায় জাপানও appeared first on Sangbad Pratidin.