সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী সপ্তাহে ভারত সফরে আসছেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আফগানিস্তানে (Afghanistan) শান্তি ফেরানোর উদ্দেশ্যে আলোচনায় বসবেন তিনি।
[আরও পড়ুন: চ্যাপলিন, পিকাসো, এলভিসদের শিকড় আসলে ভারতে! অবাক করে রোমা জনগোষ্ঠীর ইতিহাস]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, ২৭ জুলাই দু’দিনের সফরে ভারতে আসছেন ব্লিঙ্কেন (Antony Blinken)। ২৮ তারিখ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। মার্কিন বিদেশ দপ্তর সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ব্লিঙ্কেন। মূলত আফগানিস্তান নিয়েই দু’জনের মধ্যে আলোচনা হবে। এছাড়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের প্রভাব বৃদ্ধি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়গুলিও গুরুত্ব পাবে ওই বৈঠকে। এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক দপ্তরের কর্তা ডিন থমপ্সন বলেন, “ভারতের সঙ্গে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার উপর জোর দেওয়া হবে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, সাইবার সিকিউরিটি, প্রতিরক্ষা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে ভারতীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে। আফগানিস্তান নিয়েও বৈঠকে কথা হবে। আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা ও শান্তি বজায় রাখতে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে হবে। আমরা জানি, এই অঞ্চলে ভারত খুবই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী। আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে ভারতের দায়বদ্ধতাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, আফগানভূমে তালিবানের উত্থানে চিন্তিত ভারত। গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত দেশটিতে পাকিস্তানি প্রভাব রুখতে ও লগ্নি রক্ষায় গোপনে তালিবানের পাক বিরোধী গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে নয়াদিল্লি। এহেন সময়ে নয়াদিল্লিকে বাদ দিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে নতুন এক আঞ্চলিক শক্তি (কোয়াড গ্রুপ) তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে আমেরিকা। এর ফলে রীতিমতো অসন্তুষ্ট সাউথ ব্লক। তার আগে রাশিয়ার দরবারে গিয়েও আফগানিস্তান নিয়ে দরবার করে বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। কিন্তু সমীকরণ পালটে সদ্য তালিবানের আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করার জন্য আমেরিকা-রাশিয়া-চিন-কাবুলের বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মস্কো। ওই বৈঠকে ইরান ও পাকিস্তানের যোগ দেওয়ার কথাও রয়েছে বলে খবর। কয়েকদিন আগেই তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন’-এর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি বুঝেছেন, আমেরিকা, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার তৈরি ‘কোয়াড’-এর পালটা আরও এক ‘কোয়াড’ আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠছে। চিন, পাকিস্তান, রাশিয়া ও ইরান। ফলে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে পর্দার আড়ালে আলোচনা চালাচ্ছে ভারত। আর এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে নয়াদিল্লিকে আশ্বস্ত করতে বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে পাঠাচ্ছে আমেরিকা বলেই মত বিশ্লেষকদের।