সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়ে দেরাদুনে মৃত্যু হয়েছে ত্রিপুরায় পড়ুয়া অ্যাঞ্জেল চাকমার। গণপিটুনির পাশাপাশি তাঁকে ছুরি দিয়ে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। এবার, এই ঘটনায় দেরাদুনের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং এসএসপিকে নোটিশ পাঠিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
জানা গিয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য প্রিয়াঙ্ক কানুনগোর সভাপতিত্বে গঠিত একটি বেঞ্চ ১৯৯৩ সালের মানবাধিকার সুরক্ষা আইনের ১২ ধারার অধীনে মামলাটি দেখছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ত্রিপুরার ওই ছাত্রকে দেরাদুনে "বর্ণবাদী আক্রমণ করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে" নির্মমভাবে আক্রমণ করে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনা নিহত ছাত্রের জীবনের অধিকার এবং সমানাধিকারের
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেরাদুন প্রশাসনকে সব অভিযোগের তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, সাত দিনের মধ্যে এই ঘটনায় অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। এই ঘটনায় কমিশন মামলার কার্যবিবরণীর একটি কপি উত্তরাখণ্ডের মুখ্য সচিব এবং পুলিশ ডিজিপি-র কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
এই ঘটনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। থারুর তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, 'এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দেশের জন্য এটি কলঙ্কের অধ্যায়। আমাদের এমন সমাজ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে কোনও ভারতীয় যেন নিজেকে বিদেশি না মনে করেন।' তিনি আরও লেখেন, 'সমস্ত স্কুলগুলিকে ভারতের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি শেখানো উচিত। গণমাধ্যমকেও উত্তর-পূর্ব ভারতের বাসিন্দাদের মর্যাদা দিতে হবে। কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব করা চলবে না। রাজনৈতিক নেতাদের সরব হতে হবে। মনে রাখবেন, নীরবতার অর্থ অপরাধকে সমর্থন করা।'
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেন, 'দেরাদুনে অ্যাঞ্জেল চাকমা এবং তার ভাই মাইকেলের সঙ্গে যা ঘটেছে তা একটি ভয়াবহ অপরাধ। ঘৃণা রাতারাতি প্রকাশ পায় না। বছরের পর বছর ধরে প্রতিদিন, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, টক্সিক বিষয়বস্তু চালানো হচ্ছে। ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্ব, যারা ঘৃণাকে প্রশ্রয় দেয়, তাঁরা একে স্বাভাবিক করে তুলছে।' তিনি আরও বলেন, "ভারত শ্রদ্ধা ও ঐক্যের উপর নির্মিত, ভয় ও নির্যাতনের উপর নয়। আমরা ভালোবাসা ও বৈচিত্র্যের দেশ। আমাদের এমন একটি মৃত সমাজে পরিণত হওয়া উচিত নয় যেখানে সহ-ভারতীয়দের আক্রমণ করা হলে তারা অন্যদিকে তাকিয়ে থাকবে।"
