সুকুমার সরকার, ঢাকা: ‘ভারত আর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলি একই। উভয় দেশই জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থী ও মৌলবাদের মোকাবিলা করছে। রবিবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নেওয়া জিরো টলারেন্স নীতির সঙ্গে আমরাও একমত।’ রোহিঙ্গা ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘আমরা চাই নিরাপদে রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরে যাক।’
বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট করেন যে, রাখাইন প্রদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষরা মাতৃভূমিতে ফিরলে তবেই মায়ানমারে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে। ‘আমাদের দৃষ্টিতে রাখাইন রাজ্যের একমাত্র স্থায়ী সমাধান হচ্ছে দ্রুত সেখানে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা, যা সেখানকার সব জনগোষ্ঠীর জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলি বলেন, ‘বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে ভারত যেন মিয়ানমারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে। সে জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গিদের বা ভারত-বিরোধীদের বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী দেশ, দুই দেশই পরস্পরের বিশ্বস্ত বন্ধু।’ মাহমুদ আলির বক্তব্য, ‘বাংলাদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন যে, তাঁর আমলেই তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন হবে।’
সোনারগাঁও হোটেলে বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এদিনের হাই প্রোফাইল বৈঠক চলে। বৈঠক শেষে দুই বিদেশমন্ত্রীই বিবৃতি দেন। বেলা পৌনে দু’টো নাগাদ ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী। জেসিসি বৈঠকে যোগ দিতে তাঁর ঢাকায় আসা। সেখানে বাংলাদেশের তরফে নেতৃত্ব দেন বিদেশমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলি। আর ভারতের হয়ে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বৈঠকে বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা-সহ উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রবিবার দুপুরে দু’দিনের সফরে ঢাকায় আসেন সুষমা। সোমবার সকালে বারিধারায় ভারতীয় হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন তিনি। এছাড়া বাংলাদেশে ভারতের আর্থিক সাহায্যে বাস্তবায়িত ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। এর মধ্যে পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার একটি প্রকল্পও রয়েছে।