shono
Advertisement

Breaking News

ন্যাশনাল হেরাল্ড অধিগ্রহণে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি! কী অভিযোগ রাহুল-সোনিয়াদের বিরুদ্ধে?

জেনে নিন মামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ।
Posted: 03:48 PM Jun 01, 2022Updated: 03:51 PM Jun 01, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি সরকারের অষ্টম বর্ষপূর্তির পর নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠল ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলা। যে মামলায় মূল অভিযুক্ত কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) এবং তাঁর পুত্র রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। অভিযোগ, ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্রটি অধিগ্রহণের সময় ঘুরপথে সামান্য টাকার বিনিময়ে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে গান্ধী পরিবার। সেই সঙ্গে কংগ্রেসের দলীয় তহবিলের টাকাও ঘুরপথে গান্ধীদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।

Advertisement

ন্যাশনাল হেরাল্ড কী?
ন্যাশনাল হেরাল্ড (National Herald) হল স্বাধীনতার আগে জওহরলাল নেহেরু প্রতিষ্ঠিত একটি সংবাদপত্র। যা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে কংগ্রেসের (Congress) মুখপত্র হিসাবে কাজ করেছে। ন্যাশনাল হেরাল্ড নামের এই সংবাদপত্রটি প্রকাশ করত ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা। যার নির্দিষ্ট কোনও মালিক ছিল না। নেহেরু প্রায় হাজার পাঁচেক স্বাধীনতা সংগ্রামীকে এই সংস্থার শেয়ার হোল্ডার বানান। ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেড’ বা AJL ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকাটি প্রকাশ করত। সেই সঙ্গে সংস্থাটি কোয়াম-ই-আওয়াজ, এবং নবজীবন নামের আরও দুটি সংবাদপত্র প্রকাশ করত। কিন্তু ২০০৮ সালে সংস্থাটি কার্যত অকেজ হয়ে যায়। সংবাদপত্রগুলি প্রকাশ করা বন্ধ হয়ে যায়।

কী অভিযোগ?
রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর মালিকানাধীন ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা ২০১১ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড, কোয়াম-ই-আওয়াজ, এবং নবজীবন, এই তিনটি সংবাদপত্র ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডে’র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী একাই ওই সংস্থার ৭৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক। বাকি দুই শেয়ার হোল্ডার হলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজ এবং মতিলাল ভোরা (Motilal Bhora)। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিযোগ ছিল, ওই অধিগ্রহণ নিয়ম মেনে হয়নি। ঘুরপথে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের’ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসের ফার্স্ট ফ্যামিলি পরিচালিত ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’।

কীসের ভিত্তিতে অভিযোগ?
২০১১ সালে ইয়ং ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড AJL-এর থেকে ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ন্যাশনাল হেরাল্ড কিনে নেয়। সেসময় সংস্থার প্রায় ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছিল। যে ঋণের অধিকাংশই দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের দলীয় তহবিল থেকে। সংস্থাটি অধিগ্রহণের ফলে সেই ঋণের ভারও এসে পড়ে রাহুল-সোনিয়াদের ইয়ং ইন্ডিয়ানের উপরে। একবছর পরেই ন্যাশনাল হেরাল্ডের (National Herald) ঋণ পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে ঘোষণা করে দেয় ইয়ং ইন্ডিয়ান। ফলে কংগ্রেস নিজেদের প্রাপ্য সব টাকা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এখানেই অভিযোগ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর (Subramanian Swamy)। তাঁর যুক্তি, প্রথমত অকেজো হলেও ইয়ং ইন্ডিয়া অধিগ্রহণ করার সময় ন্যাশনাল হেরাল্ডের প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল। মাত্র ৫০ লক্ষ টাকায় সেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে যায় ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড। শুধু তাই নয়, কংগ্রেস ন্যাশনাল হেরাল্ডের যে ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছেড়ে দিয়েছে, সেটাও নিয়ম মাফিক হয়নি। কারণ, কংগ্রেস একটি রাজনৈতিক দল। তাঁদের তহবিলের টাকা করমুক্ত। প্রথমত, এভাবে কোনও রাজনৈতিক দল ঋণ দিতে পারে না। আর দিলেও সেটা এভাবে মকুব করতে পারে না। এভাবে ঋণ মকুব করার অর্থ দলীয় তহবিলের করমুক্ত টাকা ঘুরপথে ঢুকে গেল গান্ধীদের পকেটে। শুধু সুব্রহ্মণ্যম স্বামী নন, অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডাররাও অভিযোগ করেন, তাঁদের না জানিয়ে বেআইনিভাবে সংস্থাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।

ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলার ইতিহাস:
২০১২ সালে প্রথম অভিযোগ প্রকাশ্যে এলেও ইডি তদন্ত শুরু করে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে এই মামলায় গান্ধীরা আগাম জামিন পেয়ে যান। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, শুনানি চলাকালীন অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতাদের কাউকেই আদালতে হাজিরা দিতে হবে না। তবে এই মামলার তদন্ত চলবে। সেবছরই নতুন করে ন্যাশনাল হেরাল্ড প্রকাশিত হওয়া শুরু করে। ২০১৮ সালে ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডে’র সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। কিন্তু এক বছর পরেই সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

কংগ্রেসের দাবি:
কংগ্রেসের যুক্তি হল অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের থেকে ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেডে (YIL) শেয়ার ট্রান্সফার একেবারেই নিয়ম মেনে হয়েছে। শুধু তাই নয়, ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংস্থা নয়। সুতরাং তাঁদের লাভ বা লোকসানের কোনও প্রশ্নই উঠছে না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement