সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কদিন বাদেই দেশজুড়ে পালিতে হবে ৭৬তম সাধারণতন্ত্র দিবস। ২৬ জানুয়ারি সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর কর্তব্যপথে শুরু হবে সাধারণতন্ত্র দিবসের বিশেষ প্যারেড। এবারের প্যারেডের থিম হল 'স্বর্ণিম ভারত: ঐতিহ্য ও বিকাশ।' প্রতিবারের মতোই যেখানে অংশ নেবে স্থল, জল, বায়ুসেনা এবং বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা। কিন্তু ২৬ জানুয়ারিতেই এত বড় আয়োজন কেন? কেন ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য দিনটির মাহাত্ম্য অপরিসীম?
স্বাধীনতা দিবস নিয়ে সকলের ধারণা স্পষ্ট। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট বিদায় নেয় ব্রিটিশরা, ২০০ বছরের কালিমা মুছে স্বাধীনতার সূর্যোদয় হয় ভারতের আকাশে। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন জওহরলাল নেহরু। যদিও তখনও ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়নি। ১৯৪৭-এর ২৯ আগস্ট একটি খসড়া কমিটি তৈরি করে প্রথম সরকার। উদ্দেশ্য সংবিধান রচনা ও কার্যকর। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন বাবাসাহেব বি আর আম্বেদকর। ১৯৪৭ সালের ৪ নভেম্বর ওই কমিটি সংবিধানের একটি আনুষ্ঠানিক খসড়া পেশ করে গণপরিষদে। এর তিন বছর পর ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় প্রস্তাবিত সংবিধান। যা আনুষ্ঠানিক ভাবে কার্যকর হয় ২৬ জানুয়ারি।
ভেবে দেখলে এই ঘটনা ছিল স্বাধীনতা দিবসের সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণেই বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্রের পোশাকি নাম 'ভারতীয় সাধারণতন্ত্র'। যে সাধারণতন্ত্রের গণতান্ত্রিক, সমতাবাদী এবং ন্যায়পরায়ণ সমাজের কাঠামো হল সংবিধান। সাধারণতন্ত্র দিবস স্মরণ করে স্বাধীন ভারতের চেতনাকে। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকেই সদ্য স্বাধীন দেশটির রাষ্ট্র পরিচয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সংবিধানের শাসন কার্যকর হয় আসমুদ্রহিমাচলে। উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে এই দিনেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ঔপনিবেশিক শাসনকে অস্বীকার করে পূর্ণ স্বরাজ ঘোষণা করেছিল। সেই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছিল সংবিধান কার্যকর করার জন্যে।
২৬ জানুয়ারি সকালে বর্ণাঢ্য সামরিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। এদিন দেশের বাছাই নাগরিকদের পদ্ম পুরস্কারের ভূষিত করেন তিনি। এছাড়াও সেনাকর্মীদের পরমবীর চক্র, অশোক চক্র ও বীর চক্রে ভূষিত করেন রাষ্ট্রপতি। চলতি বছরের সাধারণতন্ত্র দিবসে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রবাও সুবিয়ান্তো। ৭৬তম সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে রাজধানী দিল্লিকে।