সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'টিউবারকিউলেসিস' বা 'টিবি' রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্বের মধ্যে নজির গড়ল ভারত। অসামান্য এই সাফল্যের জন্য দেশের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা 'হু' (WHO)। ভারতকে 'সুপার হিরো' বলে উল্লেখ করল তারা। সম্প্রতি এক রিপোর্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালের পর টিভি রোগ রুখতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে এই দেশ। এত বিরাট সাফল্যে বিশ্বের অন্য কোনও দেশে কখন দেখা যায়নি।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৩ সালে ভারতে টিবি রোগীর সংখ্যা ছিল ২৭ লক্ষ। যার মধ্যে ২৫.১ লক্ষ মানুষের চিকিৎসা হয়েছে। যার ফলে ২০১৫ সালে যেখানে টিবি রোগের চিকিৎসার হার ছিল ৭২ শতাংশ তা ২০২৩ সালে ৮৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যার ফল আগের মতো চিকিৎসা না করানোর হার বিপুল পরিমাণ কমেছে। টিবি প্রতিরোধে ভারত সরকারের আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির প্রকল্পেরও প্রশংসা করেছে হু। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৫ সালে এল লক্ষ জনসংখ্যায় ২৩৭ জন টিবি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ২০২৩ সালে সেটা কমে দাড়িয়েছে ১৯৫ তে। যার ফলে টিবি রোগীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.৭ শতাংশ। গোটা বিশ্বের টিবি রোগীর হার যেখানে ৮.৩ শতাংশ কমেছে। সেখানে ভারতে টিবি রোগীর হার দ্বিগুণেরও বেশি কমেছে।
রোগীর হার কমার পাশাপাশি মৃত্যুর হারও কমেছে ব্যাপকভাবে। হু-এর রিপোর্ট বলছে, আগে এক লক্ষ জনসংখ্যার মধ্যে ২৮ জনের মৃত্যু হত। যা এখন কমে ২২-এ নেমেছে। অর্থাৎ ২১ শতাংশ কমেছে মৃত্যু হার। হু-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তা সোশাল মিডিয়া প্ল্যার্টফর্মে শেয়ার করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জেপি নাড্ডা। তিনি লেখেন, আমরা টিবি মুক্ত ভারতের লক্ষ্যে লড়াই চালিয়ে যেতে প্রতিবদ্ধ। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টিবি রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে ১৭.৭ শতাংশ কমেছে দেশে। গোটা বিশ্বে যেখানে টিবি রোগীর হার কমেছে ৮.৩ শতাংশ, ভারতের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটা দ্বিগুণেরও বেশি।' এই সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করেন নাড্ডা।
টিবি রুখতে ভারত সরকারের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলির কথাও তুলে ধরা হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে। যেখানে বলা হয়েছে, টিবির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৫.৩ শতাংশ বাজেট বাড়িয়েছে কেন্দ্র। ২০১৫ সালে যা ৬৪০ কোটি ছিল সেটা ৩৪০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে টেস্ট ও চিকিৎসার পাশাপাশি দেশ জুড়ে ১.৭ লক্ষ্য আয়ুষ্মান আরোগ্য মান্দির গঠন করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালও উল্লেখযোগ্যভাবে অংশ নিচ্ছে এই লড়াইয়ে। শুধু তাই নয়, রোগীদের সুষম খাবারের জন্য আগে যেখানে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হত সেটা এখন হাজার টাকা করা হয়েছে। যা সরাসরি রোগীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিচ্ছে সরকার। লাগাতার একের পর এক পদক্ষেপের জন্যই এই সাফল্য বলে মনে করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।