হেমন্ত মৈথিল, মহাকুম্ভ নগর: ১৪৪ বছরের পুণ্যতিথি! উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ। বিশ্বের সবথেকে বড় এই ধর্মীয় সমাবেশে লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমাগম হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মহাকুম্ভের আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখেননি সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা মেলা প্রাঙ্গন। সাধু-সন্ত, পুণ্যার্থীদের সুরক্ষায় ব্যস্ত কুম্ভের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকরা। দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী যোগীর অনুপ্রেরণায় তাঁদের এই কাজ প্রশংসিত হচ্ছে বিশ্বে। কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটদুনিয়াও। প্রশংসা করেছে পাকিস্তানও।
প্রয়াগরাজে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে ৪০ কোটি পুণ্যার্থীর জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে এক অস্থায়ী নগরী। ১৫ বর্গমাইল এলাকায় গড়ে তোলা সেই অস্থায়ী নগরীর আয়তন নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটান বরো এলাকার দুই–তৃতীয়াংশ। মুখ্যমন্ত্রীর যোগীর নজরদারিতে এবারে মেলায় বাড়ছে স্টলের সংখ্যাও। ২০১৯-এর মেলায় যেখানে ৫৫০০টি স্থান দেওয়া হয়েছিল সাধুদের আখড়া ও অনন্যা সংস্থা, পরিষেবার জন্য। সেখানে এবার তা দেওয়া হচ্ছে ১০ হাজার আখড়া, এবং সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা সংস্থাকে।
ভক্তরা যাতে ভক্তি ভরে স্নান, পূজা-অর্চনা করতে পারেন তার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগীর পাশাপাশি মহাকুম্ভের সাফল্যের জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ মুখ্যসচিব মনোজ সিং, ডিজিপি প্রশান্ত কুমার, মিডিয়া উপদেষ্টা মৃত্যুঞ্জয়, মেলা আধিকারিক বিজয় কিরণ, ডিআইজি বৈভব কৃষ্ণ এবং এসএসপি রাজেশ দ্বিবেদী সহ হাজার হাজার কর্মকর্তা। কখনও ঘোড়ার পিঠে চড়ে, কখনও বাইকে সওয়ার হয়ে মেলায় চলছে টহলদারি। চলছে মাইকিংও।
চলছে টহলদারি।
প্রধানমন্ত্রী মোদির ‘ডিজিটাল মহাকুম্ভ’-এর স্বপ্ন সার্থক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী। স্বপ্নের বাস্তবায়নে রাজ্যের নতুন প্রতিষ্ঠিত ৭৬তম জেলা ‘মহাকুম্ভ নগরে’ রেকর্ড সময়ে যাবতীয় নাগরিক পরিষেবা প্রদান করেছেন তিনি। মেলা আয়োজনে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে ব্যাপক হারে কাজে লাগানো হয়েছে। যোগী সরকারর তরফে তৈরি করা হয়েছে ‘মহাকুম্ভ ল্যান্ড অ্যান্ড ফেসিলিটি অ্যালোকেশন’ অ্যাপ। সেখানে এক ক্লিকেই জানা যাচ্ছে পুণ্যার্থীদের প্রয়োজনের যাবতীয় তথ্য। এই অ্যাপের মাধ্যমেই পরিষেবা মিলছে দ্রুত। মেলায় অংশগ্রহণের আবেদন করা যাচ্ছে অ্যাপেই।
এবারে ডিজিটাল মহাকুম্ভের মাধ্যমে ভারতের আধ্যাত্মিক ও ঐশ্বরিক দর্শন, ভক্তের ভক্তি, পবিত্রতা বিশ্বের যেকোনও মানুষ দেখতে পাবেন। মহাকুম্ভের প্রতিটি সংবাদ সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি আন্তর্জাতিক স্তরের মিডিয়া সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। যেখানে দেশ-বিদেশ থেকে আসা ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য সমস্ত ধরনের সুবিধা রাখা হয়েছে। কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট রয়েছে সব কিছুই। সব মিলিয়ে মহাকুম্ভের এই আয়োজন ও মোদি-যোগীর সংকল্প গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।