সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমশ ভারত-কানাডা দ্বন্দ্বের মতোই জটিল আকার ধারণ করছে ভারত-মালদ্বীপ সংঘাত। কুটনৈতিক চাপানউতর চরমে উঠেছে। বিতর্কের আবহে সোমবার সকালে বিদেশমন্ত্রক ডেকেছিল ভারতে নিযুক্ত মালদ্বীপের (Maldives) রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম শাহিবকে। এবার পালটা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করল মালদ্বীপ সরকার। প্রশ্ন উঠছে, চিনের উসকানিতেই কী ভারতবিরোধী এমন আস্ফালন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রের?
সম্প্রতি ভারতকে ‘নোংরা’ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘ভাঁড়’ মন্তব্যে তুঙ্গে ওঠে বিতর্ক। এমনকী মোদিকে কটাক্ষ করেন খোদ মালদ্বীপের মন্ত্রীও। মোদির লাক্ষাদ্বীপ সফর ঘিরে এক্স হ্যান্ডেলে তাঁকে ‘ভাঁড়’ বলে তোপ দাগা হয়। যদিও এর পরে সাসপেন্ড করা হয় অভিযুক্ত মন্ত্রীকে। সেই সঙ্গে বহিষ্কার করা হয় আরও দুই মন্ত্রীকে। গোটা বিষয় নিয়ে মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে ভারতীয় হাই কমিশন। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সকালে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম শাহিবকে তলব করেছিল সাউথ ব্লক। সেই মতোই সেখানে উপস্থিত হন তিনি।সাউথ ব্লকের যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে শাহিবের মুখে চোখে ছিল উদ্বেগের ছাপ।
[আরও পড়ুন: সোম সকালে বিদেশমন্ত্রকে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত, উদ্বিগ্ন মুখ কি দিচ্ছে চাপ বাড়ার ইঙ্গিত?]
এর পালটা দেখা গেল মালদ্বীপে। দিল্লির ভঙ্গিতেই মালদ্বীপে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মুনু মহাওয়ারকে তলব করল মুইজ্জু সরকারের বিদেশমন্ত্রক। ভারত নির্ভর দ্বীপরাষ্ট্রের এহেন ভোলবদলে বেশি করে উঠে আসছে চিনের নাম। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের দাবি, মালদ্বীপ সরকারের মন্ত্রীদের একটি অংশ ভারতপন্থী হলেও অন্য অংশটি চিনপন্থী। অতএব, চিনের উসকানিতেই ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সাহস করছে মালদ্বীপ।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় বিলকিস বানোর, ধর্ষকদের ফিরতে হবে জেলেই]
উল্লেখ্য, গত ৪ জানুয়ারি লাক্ষাদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সমুদ্রসৈকতের ছবি পোস্ট করেন তিনি। এর পরেই প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেন ‘চিনপন্থী’ মালদ্বীপের (Maldives) নেতা-মন্ত্রীরা। যুবকল্যাণ মন্ত্রী মারিয়ম শিউনা সটান ‘ভাঁড়’ বলে কটাক্ষ করেন মোদিকে। লাক্ষাদ্বীপ সফরের ছবি দেখে মালদ্বীপের নেতা জাহিদ রামিজ দাবি করেন, “ভারতের সমুদ্রসৈকতগুলো তো আমাদের মতো পরিষ্কার নয়। ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসে।” এর পরই নড়েচড়ে বসে ভারত সরকার। মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে ভারতীয় হাই কমিশন। তার পরই সাসপেন্ড করা হয় মারিয়ম শিউনা ও দুই মন্ত্রী মালশা শরিফ ও মাহজুম মাজিদকে।
এদিকে বিতর্কের মাঝে সোশাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে হ্যাশট্যাগ বয়কট মালদ্বীপ। দেশের পাশে দাঁড়িয়ে মালদ্বীপের (Maldives) সমস্ত বুকিং বাতিল করেছে ‘ইজ মাই ট্রিপ’ অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) লাক্ষাদ্বীপ সফর ঘিরে মালদ্বীপের সোশাল মিডিয়ায় নানা অপমানজনক মন্তব্য করা হয়েছে। তাই মালদ্বীপের কোনও বুকিং করবে না সংস্থাটি। অন্যদিকে, মালদ্বীপে না গিয়ে লাক্ষাদ্বীপে ছুটি কাটানোর পক্ষে সওয়াল করছেন দেশবাসীর একাংশ। সেই তালিকায় রয়েছেন বলিউড তারকা থেকে ক্রিকেটাররাও।