সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এভাবেও ম্যাচ হারা যায়! এগিয়ে থেকেও হতশ্রী ভাবে ম্যাচ হারল ভারত। মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে আফগানিস্তানের কাছে ২-১ গোলে ভারত হারায় বড় সড় চাপে পড়ে গেলেন স্টিমাচের ছেলেরা। বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বে তৃতীয় রাউন্ডে ভারত পৌঁছতে পারে কি না, তা এখন নির্ভর করছে অনেক পারমুটেশন-কম্বিনেশনের উপরে।
আফগানদের বিরুদ্ধে মাইলফলকের ম্যাচ ছিল সুনীল ছেত্রীর। দেশের জার্সিতে দেড়শো ম্যাচ। সেই ম্যাচে ৩৭ মিনিটে গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। কিন্তু এগিয়ে থাকা ভারতীয় দলের রক্ষণভাগ আফগান ঝড়ের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। ডাগ আউটে বসে সুনীল ছেত্রীকে দেখতে হল দেশের হার।
[আরও পড়ুন: মহিলাদের এশিয়া কাপের সূচি প্রকাশিত, ভারত-পাক ম্যাচ কবে?]
অথচ এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। প্রথম পর্বে সৌদি আরবের আভায় আফগানদের সঙ্গে ড্র করেছিল ভারত। ফলে গুয়াহাটিতে নামার আগে চাপ বাড়ছিল ভারতের উপরে। ম্যাচটা জিততেই হতো সুনীল ছেত্রীদের। ম্যাচের শুরুতেই সোনার সুযোগ হাতছাড়া করে ভারত। সুনীলের বাঁ পায়ের শট আফগানদের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বল উড়িয়ে দেন মনবীর। তার পরেও একাধিক বার আফগানিস্তানের বক্সে আক্রমণ তুলে নিয়ে যায় ভারত। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। আফগানিস্তানও সুযোগ তৈরি করেছিল। কর্নার থেকে আমিরি হেডে বিষ ঢালেন। গুরপ্রীত সেই যাত্রায় ভারতকে বাঁচান। ৩৭ মিনিটে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত। ডান প্রান্ত থেকে ভাসানো বলে হাত লাগিয়ে আফগানিস্তানকে বিপন্ন করেন বর্ষীয়ান আমিরি। পেনাল্টি থেকে গোল করেন সুনীল। দেশের জার্সিতে প্রথম ম্যাচে গোল করেছিলেন সুনীল। তার পরে প্রতিটি মাইলফলকের ম্যাচে রয়েছে সুনীলের গোল।
বিরতির সময়ে ভারত এগিয়েছিল ১-০ গোলে। কিন্তু এক গোলে এগিয়ে থাকা যথেষ্ট নয়। ৬৮ মিনিটে তিনটি পরিবর্তন আনেন স্টিমাচ। সুনীলকে তুলে নেওয়া হয়। এটাই মনে হয় ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল। সুনীলকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কি সঠিক ছিল তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে সুনীল নিজেও সন্তুষ্ট ছিলেন না। তাঁর প্রতিক্রিয়াতেই তা বোঝা যায়।
সুনীল মাঠে থাকলে আফগানদের উপরে চাপ বাড়ত। নামেরও তো একটা চাপ থাকে! কিন্তু বহু যুদ্ধের সৈনিককে তুলে নেওয়ায় চাপ কমে যায় আফগানদের উপর থেকে। সেই সময়ে আফগানরাও ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টা শুরু করে। সুনীলকে তুলে নেওয়ার অব্যবহিত পরেই রহমত আকবরির শট রাহুল ভেকের পায়ে লেগে জড়িয়ে যায় ভারতের জালে। ৭০ মিনিটে আফগানিস্তান সমতা ফেরানোর পরেও ভারতের সম্বিত ফিরল না। ক্রমে ম্যাচ থেকে হারিয়ে গেল তারা। উলটে আফগানিস্তান আরও চাপ বাড়াতে শুরু করে। ৮৮ মিনিটে গুরপ্রীত বক্সের ভিতরে ফাউল করে ভারতকে বিপন্ন করেন। শরিফ মুখামদ পেনাল্টি থেকে গোল করে আফগানিস্তানকে এনে দেন মূল্যবান জয়।
[আরও পড়ুন: ১, ৫০, ১০০, ১৫০! মাইলফলকের ম্যাচে গোল করার পুরনো অভ্যাস বজায় রাখলেন সুনীল]
দলের এই বিশ্রী হারে স্বভাবতই হতাশ কোচ ইগর স্টিমাচ আরও একবার নিজের ইস্তফার প্রসঙ্গ তুলে দিলেন। জাতীয় দলের কোচ বলে গেলেন,”অত্যন্ত খারাপ এবং হতাশাজনক পারফরম্যান্স। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি দুঃখিত কিন্তু জুলাই পর্যন্ত আমাকে কাজ করতেই হবে। আমি চুক্তিবদ্ধ। তার পর দেখা যাবে কী হয়।” স্টিমাচ মেনে নিচ্ছেন, এভাবে ভুলভাল গোল হজম করলে ম্যাচ জেতা যা না। ভারতীয় দলের যে ফিটনেসের অভাব রয়েছে সেটাও স্বীকার করে নিচ্ছেন কোচ।