প্রণব সরকার, আগরতলা: মারণ করোনা ভাইরাসের বলি প্রথম ভারতীয়। মালয়েশিয়ায় কর্মরত ত্রিপুরার বাসিন্দা বছর তেইশের মণির হোসেনের মৃত্যু হল করোনায় আক্রান্ত হয়ে। চিন থেকে মালয়েশিয়া। লাফিয়ে বাড়ছে নোভেল করোনায় মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা। এর মধ্যেই মণিরের মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছল পেল ত্রিপুরার বিশালগড়ে।
মালয়েশিয়ায় একটি রেস্তোঁরায় কাজ করতেন মণির হোসেন। গত সপ্তাহে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভরতি হয়েছিলেন হাসপাতালে। মঙ্গলবার সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মণিরের দেহ দ্রুত ত্রিপুরায় আনতে তাঁর পরিবার দিল্লির দ্বারস্থ হয়েছে। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, পরিবারের আর্থিক হাল ফেরাতে দু’বছর আগে মালয়েশিয়া গিয়েছিল ছেলে। সেখানেই এমন মর্মান্তিক পরিণতি তাঁর। মণির হোসেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই আগরতলা বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বসানো হয়েছে মেডিক্যাল টিমও।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নিহত সোলেমানি হত্যার হোতা শীর্ষ CIA আধিকারিক!]
অন্যদিকে, হংকং ইতিমধ্যেই সিভিয়ার অ্যাকিউন্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম রোখার মোক্ষম দাওয়াই আবিষ্কার করে ফেলেছে বলে দাবি গবেষকদের। এতদিন ধরে গবাদি পশুদের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ চলছিল। কিছু খামতির জন্য প্রকাশ্যে আনতে চাননি গবেষকরা। তবে সব বাধা কাটিয়ে খুব শীঘ্রই করোনার টিকা সামনে আনবে হংকং। বুধবার এমনটাই দাবি করলেন হংকংয়ের বিজ্ঞানীরা। ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হংকং ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের গবেষক ইউয়েন কোক-ইয়াং বলেছেন, ‘‘সার্স ভাইরাসের সংক্রমণের সময় থেকেই আমরা আশঙ্কা করেছিলাম। সেইমতো টিকা তৈরির কাজ চলছিল।’’
নোভেল করোনা ভাইরাসের মতো সিঙ্গল-স্ট্র্যান্ডেড RNA ভাইরাসের সংক্রমণ রুখবে, এমন ওষুধ তৈরির কাজ এখনও গবেষণার অধীনে। তবে হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের বানানো টিকা ইনফ্লুয়েঞ্জা ও করোনা ভাইরাসের প্রভাব নির্মূল করবে বলেই দাবি করা হচ্ছে। চিনের প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সংক্রমণ যাতে নতুন করে দেশের অন্য প্রান্তে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য ছোট ছোট দলে বিভিন্ন মেডিক্যাল টিম গঠন করে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা হুবেই প্রদেশে, যেখানকার শহর ইউহান, করোনা ভাইরাসের আঁতুরঘর।
[আরও পড়ুন: করোনা ভাইরাস চাষ করছিল চিন, জৈব মারণাস্ত্র বানাতে গিয়েই বিপত্তি!]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে করোনা ভাইরাস হানা দেওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি, সে তালিকায় ভারতও রয়েছে। হু-এর সমীক্ষা বলছে, ঝুঁকির তালিকায় যে দেশগুলি রয়েছে, তার মধ্যে প্রথম নামটি হল থাইল্যান্ড। এর পরেই আছে জাপান এবং হংকং। আমেরিকা আছে ছ’নম্বরে, অস্ট্রেলিয়া ১০ নম্বরে, ইংল্যান্ড ১৭ নম্বরে এবং ভারত ২৩ নম্বরে। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের ৯ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে।
তবে এত কিছুর মধ্যে আশার কথা শুনিয়েছে কেন্দ্রের আয়ুষ মন্ত্রক। তাদের মতে, করোনা ভাইরাসকে কাত করতে হোমিওপ্যাথি খুব কার্যকর হবে। সেইসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, হোমিওপ্যাথির বিশেষ ডোজের সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটাও জরুরি। রাস্তায় বেরোলে এন-৯৫ মাস্ক পরুন। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বাড়লে হাসপাতালে যান।
The post করোনা ভাইরাসের বলি প্রথম ভারতীয়, মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু ত্রিপুরার যুবকের appeared first on Sangbad Pratidin.