সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে এক কোটি ছাড়িয়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েক লক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আগে ভ্যাকসিন আসবে? নাকি গোষ্ঠীতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে? সেই বিতর্ককে জিইয়ে রেখে সোমবার রাতে কোভ্যাক্সিনের (COVAXIN) হিউম্যান ট্রায়ালের ছাড়পত্র পেয়ে গেল ভারত বায়োটেক (Bharat Biotech)। সেই সঙ্গে করোনার প্রতিষেধক তৈরিতে প্রথম কোনও ভারতীয় ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থার নাম উঠে এল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা অনুযায়ী আত্মনির্ভর হচ্ছে ভারত? এখন এই প্রশ্নটাই ঘুরছে সবার মনে। কারণ ভারতের ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থা ভারত বায়োটেক নাকি তৈরি করে ফেলেছে কোভিডের ভ্যাকসিন! দেশবাসীকে আরও অবাক করে সোমবার রাতেই তারা ছাড়পত্র পায় হিউম্যান ট্রায়ালেও। প্রি-ক্লিনিক্যাল পর্যায়ের ট্রায়াল অর্থাৎ প্রাণীর উপর কোভ্যাক্সিন (হোল ভাইরন ইনঅ্যাক্টিভেটেড টাইপ) প্রয়োগ করা হয়েছে সংস্থার হায়দরাবাদের দপ্তরে। সাফল্যও মিলেছে। এবার গোটা ভারত জুড়ে জুলাই মাসে প্রথম দুই পর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলবে। এই কাজে ভারত বায়োটেকের সঙ্গে রয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি। গত সপ্তাহেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যাডক্স ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের খবর শিরোনামে আসে। অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্যোগে এই চ্যাডক্স ভ্যাকসিন নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্রাজিলের একটি সংস্থার সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তি হয়েছে। অন্যদিকে, এদেশের সেরাম ইনস্টিটিউটও জানিয়ে দিয়েছে যে, ২০-৩০ লক্ষ ভ্যাকসিন তারা তৈরি করে ফেলবে আগামী মাসের গোড়াতেই। যাতে হিউম্যান ট্রায়ালের ফল আশানুরূপ হলেই মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া যেতে পারে।
[আরও পড়ুন:ভাঙল সব অতীত রেকর্ড, রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত ছ’শোরও বেশি মানুষ]
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তালিকা দেখলে দেখা যাবে, নোভেল করোনার মোট ১২০টা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। যার মধ্যে কোভ্যাক্সিন এবং চ্যাডক্সের নাম সবার আগে রয়েছে। পিছিয়ে নেই চিনও। বেজিংয়ের একটিও ল্যাবও কাজ চালাচ্ছে দ্রুত গতিতে। যদিও তেমনভাবে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। কারণ, বিজ্ঞানের বেড়াজাল পেরোতে পারলেও রাজনৈতিক কারণে অনেক ভ্যাকসিনের দৌড় থমকে যায়। সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী কোনও শারীরিক সমস্যা তৈরি হবে কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক্সিকিউটিভ সদস্য অরিত্র চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, “প্রতিষেধক তৈরি করা গিয়েছে মানেই করোনার অ্যান্টিবডি মানবশরীরে দেওয়া যাবে। কিন্তু সেই অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব কতদিন? কিছু মাস পর কি বুস্টার ডোজ নিতে হতে পারে? সেই প্রশ্নগুলো থেকেই যাচ্ছে।” এর সঙ্গে তিনি আরও জানাচ্ছেন যে, এখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যে দেশই আগে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসবে, সেই কিন্তু বিশ্ব বাজারে ভাল মুনাফা লাভ করবে।
[আরও পড়ুন:রাজ্যের স্কুলপাঠ্যেও ‘করোনা’, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসে থাকবে ভাইরাসের খুঁটিনাটি]
The post ট্রায়ালের ছাড়পত্র পেল ‘কোভ্যাক্সিন’, জুলাই মাসেই মানবদেহে প্রয়োগ ভারতে তৈরি করোনা ‘টিকা’র appeared first on Sangbad Pratidin.