সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্রাম্প প্রশাসনের বিদায়বেলায় ‘ফাটল’ ধরেছে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কে। নয়াদিল্লির রুশ মিসাইল সিস্টেম কেনা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছে ওয়াশিংটন। কিন্তু ভারতের বিদেশমন্ত্রকও সাফ জানিয়ে দিয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে কিছুতেই নড়বে না দেশ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-নেপালের পর এবার টিকা চাইল ব্রাজিল, দ্রুত সরবরাহের আরজি জানিয়ে মোদিকে চিঠি]
রুশ নির্মিত এস-৪০০ (S-400) মিসাইল সিস্টেম নিয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে শুরু থেকেই টানাপোড়েন তুঙ্গে। নয়াদিল্লির ভাঁড়ারে এই অস্ত্র থাকুক তা কিছুতেই চায় না ওয়াশিংটন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে রীতিমতো নিষেধাজ্ঞার হুমকিও দিয়ে ফেলেছেন মার্কিন নীতিনির্ধারকরা। কিন্তু বিদেশমন্ত্রক সাফ জানিয়েছে, সার্বভৌম দেশ হিসেবে ভারতের বিদেশনীতি স্বাধীন। তাই প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও নেওয়া হবে দেশের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে। ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “বিশ্বমঞ্চে আমেরিকার কৌশলগত সহযোগী ভারত। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গেও আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের বিদেশনীতিও স্বাধীন। তাই আধুনিক অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় দেশের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে।” বিশ্লেষকদের মতে, আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করলেও রাশিয়া সঙ্গে পরীক্ষিত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না ভারত। এই কথা ওয়াশিংটনকে সাফ করে দিল কেন্দ্র। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, চিনের সঙ্গে রাশিয়া সামরিক সম্পর্ক মজবুত হওয়ায় মার্কিন অস্ত্র কিনে মস্কোর উপরও কিছুটা চাপ বজায় রেখেছে নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করল মার্কিন কংগ্রেসের কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস (Congressional Research Service)। সেখানে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে যে ভারত যদি রাশিয়ার কাছ থেকে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনে তাহলে আগামী দিনে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে নয়াদিল্লিকে। তবে মার্কিন এই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই ২০১৯ সালে এই চুক্তি অনুযায়ী প্রথম কিস্তিতে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার রাশিয়াকে দেয় ভারত। প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসেই রাশিয়ার তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে আমেরিকার এই নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকমের প্রতিরক্ষা চুক্তি (Defence deal) একে একে কার্যকর হয়ে চলেছে। সব মিলিয়ে অস্ত্রের বড় খদ্দের হিসেবে ভারতও অর্থনীতিকে কূটনীতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাই অস্ত্রের বেসাতির খাতিরেই গর্জালেও ভারতের উপর বর্ষাবে না আমেরিকা বলেই মনে কয়া হচ্ছে।