সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) মুক্ত শিক্ষাঙ্গনে পাঁচিল নির্মাণ ঘিরে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করলেন রাজ্যের সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্টরা। এই ঘটনা তাঁদের কতখানি ব্যথিত করে তুলেছে, তা জানিয়ে খোলা চিঠি লিখলেন বিদ্বজনেরা। কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা সেই চিঠি স্বাক্ষর করেছেন খ্যাতনামা নাট্যকার, সংগীতকার-সহ অন্তত ২০জন। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্বকবির আশ্রম কাদামাখা কুস্তির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নাট্যকার বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত থেকে সংগীতশিল্পী দেবজ্যোতি মিশ্র, কল্যাণ সেন বরাট – সকলেই তীব্র নিন্দায় মুখর।
পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘিরে দিন কয়েক ধরেই নজিরবিহীন পরিস্থিতিতে উত্তপ্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মেলার মাঠে পাঁচিল তোলার কাজ করালেও, স্থানীয় বাসিন্দা ও পড়ুয়াদের একাংশ পে-লোডার নিয়ে এসে সেই নির্মাণ ভেঙে দেন। এরপর রাজনীতির আঁচ আরও বেশি করে এসে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। পাঁচিল ভাঙায় স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের উসকানি ছিল বলে, এই অভিযোগে বিধায়ক ছাড়া কয়েকজন তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পাঁচিল তোলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে শামিল হয় পড়ুয়াদের একাংশ। দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে তৈরি হয় নজিরবিহীন অচলাবস্থা।
[আরও পড়ুন: ‘মন চাইছে মুক্ত আকাশে…’, ফেসবুক পোস্টে দলবদলের ইঙ্গিত তৃণমূল বিধায়কের? তুঙ্গে জল্পনা]
এই ঘটনায় এবার আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের বিদ্বজনরা। খোলা চিঠি লিখে তাঁদের আশঙ্কা, বহুদিনের ঐতিহ্যবাহিত স্মৃতি, শান্তিনিকেতনের সুষমা ও বিশ্বভারতীর শিক্ষা – সব সমূলে নষ্ট হতে বসেছে। কবি শঙ্খ ঘোষের পাশাপাশি চিঠি লিখেছেন রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, চন্দন সেন, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, সব্যসাচী চক্রবর্তী, দেবশংকর হালদাররা। তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, অনভিপ্রেত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কায়েমি কোনও পক্ষকেই সমর্থন করা হচ্ছে না, বরং সদর্থক, সংবেদনশীল ও পক্ষপাতহীন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই অস্থির পরিবেশের দ্রুত অবসান চান তাঁরা। এর জন্য পক্ষান্তরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিশিষ্টরা।
[আরও পড়ুন: স্ত্রীরোগের আঁতুড়ঘর সুন্দরবন, সংসার চালাতে নোনা জলে নেমে বাড়ছে জরায়ুর সমস্যা]
এদিকে, মেলার মাঠে পাঁচিল তোলা কাণ্ডে শাস্তির মুখে ৪ পুলিশ কর্মী। শান্তিনিকেতন থানার ওই পুলিশকর্মীদের ক্লোজ করে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। অভিযোগ, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কথায় তাঁরা কাজ করেছিলেন, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেননি। এই ঘটনার জেরে যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞপ্তি জারি করে নতুন বর্ষে পড়ুয়াদের ভরতি বন্ধ রেখেছে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জবাব তলব করেছে শিক্ষামন্ত্রক।
The post ‘বিশ্বকবির আশ্রম কুস্তির আখড়ায় পরিণত হয়েছে’, বিশ্বভারতীকাণ্ডে খোলা চিঠি বিশিষ্টদের appeared first on Sangbad Pratidin.