সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহু দিন থেকেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পুরুষ শাসিত হওয়ার দোষে দুষ্ট। সময় বদলে গেলেও, অভিনেত্রীদের মুখে নানা সময় শোনা যায় একথা। অনেকেই মনে করেন, এখনও পারিশ্রমিকের ক্ষেত্রে নায়িকাদের তুলনায়, নায়করা বেশি টাকা পান। তবে এসব দোষকে বাইপাস করে বলিউড হোক বা হলিউড, বেশ কিছু অভিনেত্রী এই প্রচলিত ভাবনাকে ভেঙেছেন। বক্স অফিসে একাই কাঁধে নিয়ে এগিয়েছেন ছবি। এমনকী, চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বলিউডের বাদশা, শহেনশাহ ও খিলাড়িদের। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সেই সব অভিনেত্রীকে কুর্নিশ।
বিদ্যা বালন: বলিউডে পা রেখেই একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়েছেন বিদ্যা বালন। যদিও তাঁর প্রথম সিনেমা বাংলায়। পরিচালক প্রদীপ সরকারের ‘পরিণীতা’ ছবিতে স্ক্রিনে এসেই নজর কেড়ে নেন তিনি। এই ছবিতে বিদ্যার বিপরীতে ছিলেন সইফ আলি খান ও সঞ্জয় দত্ত। ‘পরিণীতা’ ছবি থেকেই বিদ্যা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। প্রমাণ করলেন ‘ডার্টি পিকচার’, ‘কাহানি’র মতো ছবিতে অভিনয় করেই। এই দুই ছবিই বক্স অফিসে ঝড় তুলেছিল বিদ্যার কাঁধে ভর রেখে। নারী দিবসের দিন দেখে নিতে পারেন ‘পরিণীতা’, ‘ডার্টি পিকচার’ কিংবা ‘কাহানি’।
কঙ্গনা রানাউত: গত কয়েক বছর ধরে কঙ্গনার ঝুলিতে শুধুই ফ্লপ ছবি আর নানা বিতর্ক। নিন্দুকরা তো কঙ্গনাকে এখন বিতর্কের ‘ক্যুইন’ বলতেই ব্যস্ত। কিন্তু এক সময় ছিল বক্স অফিসে একাই সুপারহিট ছবি দিয়েছেন। তাঁর কাঁধে চড়েই লক্ষ্মীর ঝাঁপি ভরেছে প্রযোজকদের। এই যেমন ‘তন্নু ওয়েডস মন্নু’, ‘ক্যুইন’, ‘মনিকর্ণিকা’। অভিনয়ের জোরে কঙ্গনা তো তিন তিনবার জাতীয় পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন। কঙ্গনার সব বিতর্ককে একপাশে রেখে নারী দিবসে দেখতে পারেন ‘তন্নু ওয়েডস মন্নু’, ‘ক্যুইন’, ‘মনিকর্ণিকা’র মতো ছবি।
করিনা কাপুর: ‘জব উই মেট’ ছবির দুষ্টু-মিষ্টি গীত চরিত্র হোক কিংবা ‘হিরোইন’ বা ‘চামেলি’ ছবির বোল্ড অবতার। করিনা কিন্তু বহু দিন ধরেই বক্স অফিসের রানি। সম্প্রতি ‘জানে জা’ ছবি থেকে ওটিটিতে পা দিলেন করিনা। আর সেখানও বাজিমাত তাঁর। কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছে ‘ক্রু’ ছবির টিজার। এই ছবিতে একফ্রেমে দেখা যাবে করিনা, টাব্বু ও কৃতী স্যাননকে। নারী দিবসে চোখ রাখতে পারেন করিনা কাপুর অভিনীত এসব ছবিগুলোতেও।
[আরও পড়ুন: ‘হিটম্যান’ রোহিত শর্মার সঙ্গে বাংলার ঋষি কৌশিক! ব্যাপার কী?]
টাব্বু: একসময় টাব্বু মানেই রূপের বন্যা। নায়কদের চাপে পড়ে তাঁর অভিনয় ক্ষমতা প্রায় অস্ত যাচ্ছিল। ঠিক এই সময়ই পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজ ও মধুর ভান্ডারকরের পাল্লায় পড়লেন টাব্বু। মুক্তি পেল বিশালের ‘মকবুল’ ও মধুরের ‘চাঁদনি বার’। টাব্বু বুঝিয়ে দিলেন তিনি শুধু নায়িকা নন, দুরন্ত অভিনেত্রীও। এরপর ‘হায়দর’, ‘দৃশ্যম’ ছবিতেও নজর কাড়লেন তিনি। নারী দিবসে দেখে নিতে পারেন টাব্বু অভিনীত এইসব ছবি।
রানি মুখোপাধ্যায়: ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবির পর বেশিরভাগ সময় রানিকে দেখা গিয়েছে সেই রূপযৌবনে ভরপুর নায়িকা চরিত্রেই। তবে রানির কেরিয়ার ঘুরল যেন বিয়ের পর। নারী কেন্দ্রিক ছবিতে রানি পা দিলেন ‘মর্দানি’ ছবি থেকে। ‘মর্দানি’ ও ‘মর্দানি ২’, দুটি ছবিতেই অ্যাকশন অবতারে রানি যেন বক্স অফিসকে হাতের মুঠোয় রাখলেন। গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মিসেস চ্যাটার্জী ভার্সেস নরওয়ে’ ছবিতে কামব্যাক করে রানি প্রমাণ করলেন এখনও তিনিই বলিউডের আসল রানি।
আলিয়া ভাট: প্রথম ছবি ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’-এ নজর কেড়েছিলেন আলিয়া। তবে আলিয়া নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে প্রমাণ করলেন ‘হাইওয়ে’, ‘রাজি’ ছবিতে। তবে চমক দিলেন সঞ্জয়লীলা বনশালির ”গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি” ছবিতে দুরন্ত অভিনয় করে। এই ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারও জিতে নেন আলিয়া।
দীপিকা পাড়ুকোন: দীপিকা মানেই মায়াভরা চাউনি। দীপিকা মানেই চটক। তা প্রথম ছবি ‘ওম শান্তি ওম’ হোক কিংবা হালফিলের ওটিটি রিলিজ ‘গহেরাইয়াঁ’। ‘ছপক’ হোক কিংবা ‘বাজিরাও মস্তানি’, কিংবা ‘পদ্মাবত’। দীপিকার ম্যাজিকে বক্স অফিস কিন্তু কাবু।
বলিউড ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। নায়িকারও আর এখন শুধুই আর ডল পুতুল নয়। আর তাই তো বলিউডে খান, বাদশা, খিলাড়ির পাশাপাশি এখন সমান গুরুত্ব, করিনা, দীপিকা, আলিয়াদের।