কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০০/৫ (জেসন-৫৬, নীতীশ-৪৮, হাসারাঙ্গা-২৪/২)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: ১৭৯/৮(কোহলি-৫৪, বরুণ-২৭/৩)
২১ রানে জয়ী কেকেআর
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা চার ম্যাচ হেরে দেওয়ালে প্রায় পিঠ ঠেকে গিয়েছিল কেকেআর-এর। আরসিবি-র বিরুদ্ধে নামার আগে নাইট শিবিরের তারকা জেসন রয় জানিয়েছিলেন, টুর্নামেন্টের প্রথম সাতটি ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। বাকি সাতটি ম্যাচে সেরাটা দিতে হবে।
সেই মতোই বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে বুধবার ঘুরে দাঁড়াল কেকেআর। নাইটরা ২০ ওভারে করে ৫ উইকেটে ২০০ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে আরসিবি থামল ৮ উইকেটে ১৭৯ রানে। চিন্নাস্বামীতে গিয়ে বিরাট কোহলির দলকে হারিয়ে আসা সিংহের গুহায় ঢুকে সিংহশিকারের সমান। তার উপরে কেকেআর মোটেও স্বস্তিতে ছিল না। পরপর হারতে হারতে ধাক্কা খেয়েছিল তাদের আত্মবিশ্বাসে। চিন্নাস্বামীতে জয়ের সরণীতে ফিরে অক্সিজেন পেয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)।
চোট রয়েছে আরসিবির তারকা ফ্যাফ ডু প্লেসির। এই চোটের কারণেই তিনি পুরো ম্যাচ খেলতে পারছেন না। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে তাঁকে ব্যবহার করছে আরসিবি। ডু প্লেসির পরিবর্তে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিরাট কোহলি। কেকেআরের বিরুদ্ধেই ক্যাপ্টেন হিসেবে শেষ ম্যাচে নামলেন তিনি। কিন্তু ম্যাচটা জিততে পারলেন না। টস অবশ্য জেতেন বিরাটই। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আরসিবি (RCB)।
[আরও পড়ুন: টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কেন সুযোগ পেলেন রাহানে? কারণ জানালেন পাঠান]
কেকেআরের হয়ে জেসন রয় ও নারায়ণ জগদীশন প্রথম উইকেটে ৮৩ রান করেন। জগদীশনকে ২৭ রানে ফেরান বিজয়কুমার। জগদীশন ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই আউট হন জেসন রয়। বিজয়কুমারেরই শিকার তিনি। ২৯ বলে ৫৬ রান করেন জেসন। কিন্তু যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে দেন, তাতে নিজের উপরই তিনি অসন্তুষ্ট হন। দ্রুত দুই উইকেট খোয়ানোর পরে নীতীশ রানা ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার ৮০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ২১ বলে ৪৮ করেন রানা। ভেঙ্কটেশ আইয়ার ২৬ বলে ৩১ রান করেন। দুই ব্যাটসম্যানকেই ফেরান হাসারাঙ্গা। উইকেটে জমে যাওয়া রানা ও ভেঙ্কটেশ আইয়ার ফিরে যাওয়ার পরে অনেকেরই মনে প্রশ্ন ছিল নাইটরা কি পারবে দুশোয় পৌঁছতে? শেষের দিকে রিঙ্কু সিং (১৮) ও ডেভিড ওয়েইজ (১২) কেকেআর-কে ২০০ রানে পৌঁছে দেন।
রান তাড়া করতে নেমে ফ্যাফ ডু প্লেসি ও বিরাট কোহলি দ্রুতগতিতেই রান তুলছিলেন। কিন্তু সুয়শ শর্মা পার্টনারশিপ ভাঙেন। সুয়শের বলে প্রোটিয়া তারকা ধরা পড়েন রিঙ্কু সিংয়ের হাতে। ৭ বলে ১৭ রান করেন ডু প্লেসি। আরসিবির রান তখন ৩১। শাহবাজ আহমেদও (২) সুয়শের শিকার। বিপজ্জনক গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫)বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না ক্রিজে। অজি তারকা বরুণ চক্রবর্তীর শিকার।
হঠাতই ৫৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আরসিবি। কিন্তু বিরাট কোহলি ও মাহিপাল লোমরোর ধীরে ধীরে চাপটা কাটাচ্ছিলেন। বড় শট খেলছিলেন লোমরোর। ফলে কোহলি চাপ অনুভব করছিলেন না। কিন্তু সেই লোমরোরকে (৩৪) ফেরান বরুণ চক্রবর্তী। আরসিবি হয়ে যায় ৪ উইকেটে ১১৩। লোমরোর ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙ্কটেশ আইয়ারের দুরন্ত ক্যাচে শেষ হয় কোহলির (৫৪) ইনিংস। আন্দ্রে রাসেলের বলে কোহলি আউট হন। আরসিবির গলার উপরে চেপে বসা ফাঁসটা ধীরে ধীরে আলগা হচ্ছিল। কিন্তু দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে যায় ব্যাঙ্গালোর। ৫ উইকেটে ১১৫ হয়ে যায় আরসিবি।
দীনেশ কার্তিক ও সুয়াশ প্রভুদেশাই ২২ রান জোড়েন। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন প্রভুদেশাই (১০)। ম্যাচ হাতের বাইরে আগেই চলে গিয়েছিল। আরসিবি শেষ পর্যন্ত করে ১৭৯ রান। ইডেনে কেকেআরের কাছে ৮১ রানে হেরে গিয়েছিল আরসিবি। এদিনও প্রতিশোধ নেওয়া হল না ব্যাঙ্গালোরের।