কেকেআর: ২৩২/২(শুভমান-৭৬, লিন-৫৪, রাসেল-৮০*)
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১৯৮/৭ (সূর্যকুমার- ২৬, হার্দিক-৯১)
৩৪ রানে জয়ী কেকেআর
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ম্যাচ চলাকালীন ভিআইপি গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে যেন একটু মেপে-জপেই হাসছিলেন শাহরুখ। রাসেল-শুভমানদের ওভার-বাউন্ডারিতে হাততালিও দিচ্ছিলেন অনবরত। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই কোথাও একটা জড়তা কাজ করছিল। কারণ এম্যাচে অতীতের নারী-নক্ষত্র জানেন তিনি। জানেন, পরিসংখ্যানে অনেকটাই পিছিয়ে তাঁর দল। জানেন, বারবার লড়াই করেও নিজের ঘরের দলের কাছে হারের যন্ত্রণাটা। এটা তো তাঁর কাছে শুধুই বাইশ গজের লড়াই নয়, সম্মানেরও বটে। তাই কার্তিকদের মুখে হাসি দেখে নিঃসন্দেহে এদিন সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত তিনিই। মুম্বইয়ে যা হবে দেখা যাবে। কিন্তু রবিবাসরীয় ইডেনে তিনিই কিং। তাঁর নাইটরাই এরাতের বাদশা। এর চেয়ে বেশি সন্তুষ্টির আর কী-ই বা হতে পারে কলকাতার মালিকের কাছে।
[আরও পড়ুন: মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের থেকে কোনও অর্থ নেন না, স্বার্থের সংঘাত নিয়ে মুখ খুললেন শচীন]
শেষ ছ’টা ম্যাচে এই দলটাই জয়ের মুখ দেখেনি? ব্যাটিং-বোলিংয়ে ছন্নছাড়া অবস্থা হয়েছিল এই দলটারই? এমনকী দলের অন্দরে অশান্তির আঁচও পড়েছিল? রবিবারের ম্যাচের পর এই বিষয়গুলি বিশ্বাস করতেই যেন বাধছে। কারণ এদিন ইডেন সাক্ষী রইল সেই নাইটবাহিনীর, যারা সিংহ গর্জন দিয়েই শুরু করেছিল এবারের আইপিএল। ছকে সামান্য পরিবর্তন। তাতেই বাজিমাত করলেন দীনেশ কার্তিকরা। নাহলে কে ভেবেছিল, মারকাটারি মেজাজে থাকা রোহিত শর্মাদের এভাবে হারাবে আত্মবিশ্বাসের তলানিতে গিয়ে ঠ্যাকা একটা দল! এ ম্যাচ জিতে কেকেআর একাই জমিয়ে দিল প্লে-অফের অঙ্কটা।
কুলদীপ যাদবকে বাদ দেওয়া আর উথাপ্পাকে দলে রাখা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কার্তিককে। কিন্তু ক্যাপ্টেন নিজের সিদ্ধান্তে অনড়। এদিন আবার দলে ফিরলেন উথাপ্পা। তবে শুভমান, লিন, রাসেলদের জন্য কোনও পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়নি তাঁকে। ভরসা করে দলে নিয়েছিলেন দুই পেসার গার্নি ও ওয়ারিয়েরকে। দ্বিতীয়জনকে অবশ্য ছাপিয়ে গেলেন নারিন ও রাসেল। দুটি করে উইকেট পেলেন তাঁরা। গার্নিও পান দুটি উইকেট। দল বাছাই নিয়ে এদিনও তাই বিতর্কের উর্ধ্বে নিজেকে রাখতে পারলেন না কার্তিক। তবে ব্যাটিং লাইন আপে বদল ঘটিয়েই এ যাত্রায় পাশ করে গেলেন তিনি। রুদ্রমূর্তি রাসেলের কথা মাথায় রেখেই এই পরিবর্তন? জানা নেই। তবে যা হল, তাতে মন্দ কিছু হল না। লিনের সঙ্গে ওপেন করতে নামায় নিজেকে প্রমাণ করার অনেকটা জায়গা পেলেন তরুণ ব্যাটসম্যান শুভমান। সুযোগের সদ্ব্যবহারও করলেন। ৪৫ বলে অনবদ্য ৭৬ রান করে মালিঙ্গা-বুমরাহদের রীতিমতো ধন্দে ফেলে দিলেন তিনি। আর অর্ধ শতরান করে লিন আউট হতেই সকলকে অবাক করে তিন নম্বরে নেমে পড়লেন রাসেল। ইডেনের পিচ কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের কাছে কাকতিমিনতি করে উইকেটে ঘাস কাটিয়ে রাখার কাজটা আগেই সেরে রেখেছিলেন কার্তিক। ফলে বিপক্ষের পেসারদের সমস্যায় ফেলে ভেলকি দেখালেন ব্যাটসম্যানরাই। ৪০ বলে ৮০ রানে অপরাজিত রইলেন রাসেল। স্কোরবোর্ডে তখন জ্বলজ্বল করছে ২৩২ রান। তাও আবার মাত্র দুই উইকেট খুইয়ে।
তবে শুধু রাসেল আর শুভমানকে নয়, এরাত মনে রাখবে হার্দিক পাণ্ডিয়ার দুর্দান্ত ৯১ রানের ইনিংসকেও। চাপের মুখে ওভাবে ব্যাট করতে এলেম লাগে বইকী। তবে এদিনের ম্যাচে সবচেয়ে বেশি মন খারাপ নিঃসন্দেহে রোহিত শর্মার। ইডেন তাঁকে কখনও খালি হাতে ফেরায় না। এদিন ব্যতিক্রম ঘটল। তাই ওয়াংখেড়েতে যে ক্ষুদার্থ সিংহরাই নাইটদের অপেক্ষায় থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
[আরও পড়ুন: মেজাজ হারিয়ে সমর্থককে সজোরে ঘুসি নেইমারের, ভাইরাল ভিডিও]
The post ছক ভেঙেই বাজিমাত, মুম্বইকে হেলায় হারিয়ে প্লে-অফের অঙ্ক জমিয়ে দিল কেকেআর appeared first on Sangbad Pratidin.