গুজরাট টাইটান্স: ২১৪/৪ (ঋদ্বিমান-৫৪, সুদর্শন-৯৬, পাথিরানা-৪৪/২)
চেন্নাই সুপার কিংস: ১৭১/৫ (কনওয়ে-৪৭)
ডারওয়ার্থ লুইস নিয়মে ৫ উইকেটে জয়ী চেন্নাই সুপার কিংস
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় বলে কারও পৌষমাস তো কারও সর্বনাশ। একদিকে আকাশের মুখ ভার দেখে যখন ধোনিভক্তদের মুখের গুমোট ভাবও প্রকোট হচ্ছে, তখন বিদ্যুৎ ঝলকের মতো গুজরাট সমর্থকদের মুখে খেলে যাচ্ছে হাসি। কারণ এহেন পরিস্থিতি থাকলে যে ট্রফি আসবে হার্দিক পাণ্ডিয়াদের শিবিরেই, তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কে জানতে মহাকাব্যের তখনও অনেকগুলো পাতা বাকি! বাকি ছিল রুদ্ধশ্বাস ক্ল্যাইম্যাক্সের দৃশ্য। ধোনির নায়ক হওয়ার রাতে পরাস্ত ভিলেন বৃষ্টিও। হলুদ জার্সিতে ভরে ওঠা মোতেরা স্টেডিয়ামের মন ভাল দিল চেন্নাই সুপার কিংস। আর সেই সঙ্গে পঞ্চমবার ধোনির হাতে উঠল আইপিএল ট্রফি।
গত ৩১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টুর্নামেন্টের ১৬ তম মরশুম। টানা প্রায় দু’মাস ধরে একের পর এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের সাক্ষী থেকেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কখনও শেষ ওভারে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন রিঙ্কু সিং, তো কখনও বল করে শেষ ওভারে জয় এনে দিয়েছেন অর্জুন তেণ্ডুলকর। ফাইনালে তেমনই এক হাইভোল্টেজ ম্যাচ দেখার আশায় ছিলেন দর্শকরা। প্রথমে সে গুড়ে বালি পড়লেও রাত ১২.১০ মিনিটের পর বদলে যায় ছবিটা। ১৫ ওভারে ১৭১ রানের টার্গেট সামনে রেখে নতুন উদ্যমে মাঠে নামেন ঋতুরাজ, কনওয়েরা। ১০ ওভারের আগেই ১০০ রান তুলে ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে দেয় চেন্নাই।
[আরও পড়ুন: রাস্তায় ঝাঁপ দিয়ে অভিষেকের কনভয় আটকানোর চেষ্টা, ঘাটালে সাসপেন্ড TMC নেতা]
রবিবার টানা বৃষ্টি হয়েছিল। মাঠের অবস্থার কথা ভেবেই এদিন টস জিতে হার্দিকদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন চেন্নাই ক্যাপ্টেন ধোনি। চলতি আইপিএল মরশুমে তিনটি সেঞ্চুরির মালিক শুভমান গিল এদিন ফেরেন ৩৯ রানে। সৌজন্যে ধোনির বিদ্যুৎ গতির স্টাম্পিং। তবে দুরন্ত হাফ সেঞ্চুরি করেন ঋদ্ধিমান। সেই সঙ্গে সাই সুদর্শনের অনবদ্য ৯৬ রানের দৌলতে ২০০-র গণ্ডি পেরিয়ে যায় গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু ২১৫ রানের টার্গেট নিয়ে চেন্নাই মাঠে নামতেই শুরু বৃষ্টি। তবে তাতেও দমানো গেল না ধোনিবাহিনীকে। ক্যাপ্টেন কুল প্রথম বলে আউট হলেও দিনের শেষে জয়ী তাঁর দল। তাঁরই নেৃতৃত্বে। আরও একবার। এই খেলা দেখার জন্যই তো আহমেদাবাদে হঠাৎ উঠেছিল হলুদ ঝড়!
ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে যেকোনও অসম্ভবই সম্ভব, সেটাই বুঝিয়ে দিল চেন্নাই। গোটা টুর্নামেন্টে নিজের পারফরম্যান্সের জন্য একাধিকবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে যে জাদেজাকে, তিনিই এদিন হয়ে রইলেন জয়ের অন্যতম নায়ক। শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়েই অসাধ্যসাধন করলেন তিনি। সেই রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলেন ধোনি। চোখ খুলল গোটা দল সেলিব্রেশনের জন্য ডাগআউট থেকে মাঠে পৌঁছে যাওয়ার পর। তারপরই জাদেজাকে তুলে নিলেন কোলে। একনিমেষে মুছে গেল সব দূরত্ব। আর সেই সঙ্গে ক্রিকেট ইতিহাসের পাতায় আরও একবার স্বর্ণাক্ষরে খোদাই করা হল ধোনির নাম। যিনি থাকলে যে কোনও প্রতিকূলতা পেরনো সম্ভব। এই টুর্নামেন্ট আবারও আপনাকে পাবে কি না জানা নেই, তবে আপামর ক্রিকেটপ্রেমীর মনে আপনি থাকবেন স্যর।