সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোর করে দেশের মানুষের উপর ইসলামি আইন চাপিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন, ইজরায়েলি (Israel) সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে এই কথা বলেছিলেন ইরানের (Iran) লেখক মেহদি বাহমান। এহেন ‘অপরাধে’ গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল ইরানের মৌলবাদী প্রশাসন। প্রায় দু’মাস আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগেই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই হিজাব বিতর্কে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা ইরান। হিজাব না পরার কারণে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই হিজাব বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানিয়ে পথে নামেন ইরানের সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদে সরব হন সেদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। কিন্তু প্রতিবাদীদের থামাতে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে খোমেইনির প্রশাসন। শুধুমাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে একাধিক প্রতিবাদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: শীঘ্রই ভারতীয় দলে দ্রাবিড় যুগের অবসান! রোহিতদের হেডস্যর হওয়ার পথে লক্ষ্মণ]
এহেন পরিস্থিতিতেই প্রকাশ্যে এসেছে মেহদির মৃত্যুদণ্ডের খবর। ইরানের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে একটি ইজরায়েলি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন ইরানি সাহিত্যিক। দেশের মৌলবাদী প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন তিনি। বিখ্যাত সাহিত্যিকের দাবি ছিল, সাধারণ মানুষের উপর জোর করে ইসলামি আইন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশের অন্দরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ে তোলার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন তিনি। এখানেই শেষ নয়। ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সমস্যা সমাধান করে সুস্থ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি।
এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পরে দেশের প্রশাসনের রোষানলের পড়েন মেহদি। তাছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে ইরানের শিয়া ধর্মগুরু মাসৌমি তেহরানির সঙ্গে কাজ করেছেন এই সাহিত্যিক। নানা ধর্মের প্রতীক হিসাবে পরিচিত চিহ্নগুলি ব্যবহার করে নানা ধরণের শিল্পকর্ম তৈরি করতেন তাঁরা। সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতাদের সেগুলি উপহার হিসাবে দেওয়া হয় এই জিনিসগুলি। সবমিলিয়ে, নানা কারণেই মেহদির প্রতি অসন্তুষ্ট ছিল ইরানের প্রশাসন। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাবাসের পরেই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিল মৌলবাদী প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: ২০২৩-এ আর্থিক মন্দার মুখে পড়বে বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ, হুঁশিয়ারি IMF প্রধানের]