সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাস নিধনে গত আট মাস ধরে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। এর মাঝেই একাধিকবার ইহুদি দেশটিতে হামলা চালিয়েছে ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের হেজবোল্লা। এবার তারা প্রস্তুত হচ্ছে ফের একবার ইজরায়েলের বুকে ভয়ংকর আঘাত হানার! হুমকি দিয়ে জঙ্গি সংগঠনটি জানিয়েছে, সেই 'সারপ্রাইজ' ই নাকি এবার অপেক্ষা করছে তেল আভিভের জন্য। কয়েকদিন আগেই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মৃত্যু হয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির। যার পরেই আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে কোনওভাবে কী এর পিছনে ইজরায়েলের হাত রয়েছে? এই আবহে হেজবোল্লার এই হুঁশিয়ারি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাইসির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিল হেজবোল্লার সেক্রেটারি-জেনারেল হাসান নাসরাল্লাহ। গত শুক্রবার এক অনুষ্ঠানের পর টেলিভিশনে নাসরাল্লাহ কড়া হুমকি দিয়ে বলেন, "আমাদের শক্তিশালী প্রতিরোধের মোকাবিলা করতে হবে আপনাদের। সেই সারপ্রাইজের জন্য অপেক্ষা করুন।" গাজায় হামলা তেল আভিভের হামলার কথা উল্লেখ করে নাসরাল্লাহ বলে,"ইজরায়েলের নেতারাও মেনে নিয়েছে এত মাস গাজায় যুদ্ধ করে তারা কোনও লক্ষ্য়ই পূরণ করতে পারেনি। বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ যেভাবে প্যালেস্টাইনকে রাষ্ট্রের মর্যাদা দিচ্ছে তা ইজরায়েলের জন্য বড় ক্ষতি।" বলে রাখা ভালো, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের পক্ষে রয়েছে হেজবোল্লা। ফলে গাজার পাশাপাশি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ইজরায়েল-লেবানন সীমান্তও।
[আরও পড়ুন: ‘নগ্নতা আমাদের সংস্কৃতি নয়’, মেগানের নাইজেরিয়া সফরের পরই বিস্ফোরক ফার্স্ট লেডি]
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসেই শুরু থেকেই হামলা-পালটা হামলায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। ইরানের দূতাবাসে ইজরায়েলি হামলার পর থেকে ইরান-ইজরায়েলের একে অপরকে লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালায়। তার পর আসরে নামে লেবাননের হেজবোল্লাও। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইজরায়েলে অন্তত ১২টি রকেট ছোড়া হয় জঙ্গি সংগঠনটির তরফে। যার পালটা দিয়ে লেবাননের অন্তত ৪০টি এলাকা লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেও। সেই আক্রমণে নিকেশ হয় ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনের একাধিক নেতা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার প্রতিশোধ নিতেই এবার ইজরায়েলে আগুন ঝরানোর পরিকল্পনা করছিল হেজবোল্লা। তার মাঝেই আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে রাইসির মৃত্যু। যে ঘটনায় ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে। নানা রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার তরফে। কিন্তু সেই অভিযোগের কোনও পোক্ত প্রমাণ দিতে পারেনি কেউই। অন্যদিকে, এই বিতর্কের মাঝেই ইজরায়েল সাফ জানিয়ে দেয় ইরানের প্রেসিডেন্টের কপ্টার ভাঙার নেপথ্যে তাদের কোনও ভূমিকা নেই। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হেজবোল্লার এই হামলার হুমকির পিছনে রাইসির মৃত্যুও একটা কারণ হতে পারে।