সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইব্রাহিম রাইসির পর কে? আপাতত ইরানে এই প্রশ্নটাই সবচেয়ে জোরাল হয়ে উঠেছে। গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইরানের (Iran) তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রাইসি। তাঁর মৃত্যুর পর মসনদে কে বসবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর টক্কর। প্রথম দফার নির্বাচনে নিষ্পত্তি হয়নি। বরং চরমপন্থী নেতা সাইদ জালিলির থেকে বেশি ভোট পেয়েছেন সংস্কারপন্থী নেতা পেজেস্কিয়ান। নতুন করে ভোটাভুটির প্রস্তুতি চলছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর একচ্ছত্রাধিপত্য কি আগের মতো নেই? তিনি কি আর সেদেশের 'শেষ কথা' নন?
প্রসঙ্গত, ইরানের সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে সাময়িকভাবে ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সেই পদের দায়িত্ব সামলাবেন। এর পর ৫০ দিনের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু অন্তিম সিদ্ধান্ত রয়েছে ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খামেনেইর হাতে। এক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলা: ইডিকে ৭০ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে চান ঋতুপর্ণা!]
কিন্তু নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে ত্রিশঙ্কু অবস্থা। গত ২৮ জুন একদফা ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ইরানে। ইরানের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী জয়লাভ করার জন্য প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের কারও ঝুলিতেই সেই সংখ্যক ভোট পড়েনি। পেজেস্কিয়ান ৪২. ৫ শতাংশ ও জালিলি ৩৮. ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ফলে আগামী ৫ জুলাই ফের একদফা নির্বাচন হবে ইসলামিক দেশটিতে। উল্লেখ্য, ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন মহম্মদ মুখবার। তিনি খামেনেইর খুব কাছের লোক বলেই পরিচিত। রাইসির মৃত্যুর পর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে উঠে এসেছিল তাঁর নামই। কিন্তু এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের দৌড়ে তিনি নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, খামেনেই-এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। ইরান জুড়ে যেন নতুন হাওয়া, বসন্তের নির্ঘোষ।
আর এই প্রসঙ্গেই ফিরে আসছেন কুর্দ তরুণী মাহসা আমিনি। প্রায় দুবছর আগে নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। ‘ঠিক মতো’ হিজাব না পরাই ছিল অপরাধ! ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। দিকে দিকে শুরু হয় বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল। যা নাড়িয়ে দিয়েছিল সেদেশের ‘মোল্লাতন্ত্র’কে। তীব্রতা কিছুটা কমলেও দেশজুড়ে এখনও চলছে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। এমন বেনজির গণউত্থানের পর এবার নির্বাচনের এই ছবি কিন্তু ইরান বসন্তের দিকেই অঙ্গুলি নির্দেশ করছে।