সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত মে মাসে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ইরানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। তাঁর মৃত্যুর পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল এবার ইসলামিক দেশটির প্রেসিডেন্টের আসনে কে বসবেন? আর মসনদে বসার দৌড়ে এই মুহূর্তে জোর টক্কর চলছে সংস্কারপন্থী নেতা মাসুদ পেজেস্কিয়ান ও চরমপন্থী নেতা সাইদ জালিলির মধ্যে। ইরানের এই নির্বাচনের দিকে নজর রয়েছে ভারতেরও।
গত ২৮ জুন, শক্রবার, প্রেসিডেন্ট পদের জন্য একদফা ভোটপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ইরানে। কিন্তু তার ফলাফল দাঁড়ায় ত্রিশঙ্কু। ইরানের নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী জয়লাভ করার জন্য প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের কারও ঝুলিতেই সেই সংখ্যক ভোট পড়েনি। এদিন প্রথম দফার নির্বাচন শেষে দেখা যায় পেজেস্কিয়ান ৪২. ৫ শতাংশ ও জালিলি ৩৮. ৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তৃতীয় হয়ে প্রেসিডেন্ট পদের দৌড় থকে ছিটকে যান ইরানি পার্লামেন্টের স্পিকার মহম্মদ বাঘের ঘালিবাফ। অর্থাৎ ৫০ শতাংশের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে পারেননি কেউই। ফলে আগামী ৫ জুলাই ফের একদফা নির্বাচন হবে ইসলামিক দেশটিতে। ৫০ শতাংশের ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে কে ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন সেদিকেই নজর আন্তর্জাতিক মহলের।
[আরও পড়ুন: ইজরায়েলের সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হেজবোল্লার, আহত ১৮ জওয়ান]
বলে রাখা ভালো, ২০২১ সালে বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্টের আসনে বসেন ইব্রাহিম রাইসি। ভোটযুদ্ধে তাঁর সামনে টিকতে পারেননি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি। সেই বছরই ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন মহম্মদ মুখবার। তিনি খামেনেইর খুব কাছের লোক বলেই পরিচিত। রাইসির সঙ্গেও মুখবারের সম্পর্ক খুব ভালো ছিল। রাইসির মৃত্যুর পর পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসাবে উঠে এসেছিল মুখবারের নামই। কিন্তু এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্টের দৌড়ে তিনি নেই। প্রসঙ্গত, নরমপন্থী হিসাবেই ইরানে পরিচিত পেজেস্কিয়ান। অন্যদিকে, জালিলি দক্ষিণপন্থী মনোভাব পোষণের জন্যই পরিচিত ইরানিদের মধ্যে।
এদিকে, ইরানের এই নির্বাচনে কড়া নজর রয়েছে ভারতের। কারণ কূটনৈতিক মহলের ধারণা, চরমপন্থী নেতা সাইদ জালিলি যদি প্রেসিডেন্ট হন তাহলে তিনি ভারতের কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলতে পারেন। পাশাপাশি ভারতে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলতে পারেন তিনি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে নয়াদিল্লি ও তেহরানের যে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, বদল আসতে পারে তাতেও।