সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলাদের আরও কোণঠাসা করে নয়া ফতোয়া ইরানে। এবার হিজাব না পরায় দু’বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ‘মানসিক চিকিৎসার’ নির্দেশ দিল দেশটির সরকার।
হিজাব না পরলে কড়া শাস্তির পাশাপাশি এবার মানসিক চিকিৎসার নির্দেশ দিচ্ছে ইরান সরকার। এমনই অভিযোগ নিয়ে দেশের বিচারবিভাগের প্রধানের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে এমন চারটি সংস্থা। সংস্থাগুলির প্রেসিডেন্ট গোলাম-হোসেন মহোসেনি ইজেই সেই খোলা চিঠিতে অভিযোগ জানিয়েছেন, সরকার হিজাব বিদ্রোহ দমনে মানসিক চিকিৎসাকে হাতিয়ার করছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, আফসানে বায়েগন নামে ৬১ বছরের এক ইরানি অভিনেত্রী হিজাব না পরায় প্রশাসনের রোষের মুখে পড়েছেন। তেহরানের একটি কোর্ট তাঁকে দু’বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ‘মানসিক চিকিৎসা’ করানোর নির্দেশ দিয়েছে।
আফসানের বিরুদ্ধে ইরান প্রশাসনের অভিযোগ, তিনি মাথা না ঢেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দিয়েছেন। একটি সামাজিক অনুষ্ঠানেও তাঁকে হিজাব ছাড়া দেখা গিয়েছে। এরপরই হিজাব নীতি লঙ্ঘনের অপরাধে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে তেহরানের আদালত। সেই শাস্তির তালিকাতেই যুক্ত হয় ‘মানসিক চিকিৎসা’। আফসানেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তিনি যেন সপ্তাহে একবার মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ‘পরিবার বিদ্বেষী মানসিক রোগের’ চিকিৎসা করান। এবং নিজের চিকিৎসার রিপোর্ট আদালতে পেশ করেন। এছাড়াও, দু’বছরের জন্য তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ও দেশের বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ইরানি এই অভিনেত্রী ইরানে হওয়া হিজাব আন্দোলনের অন্যতম সমর্থক।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার ‘হৃদয়ে’ হামলা ইউক্রেনের, মোড় ঘুরছে যুদ্ধের?]
উল্লেখ্য, ২০২২-এর ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানে নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় ২২ বছরের কুর্দ তরুণী মাহসা আমিনির। জানা যায়, হিজাব না পরায় তাঁকে আটক করেছিল পুলিশ। হেফাজতে থাকাকালীনই নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় মাহসার। তারপর থেকেই হিজাব বিরোধিতায় উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। শুরু হয় তুমুল সরকার বিরোধী প্রতিবাদ। প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও সুপ্রিম লিডার আলি খামেনেইর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায় হাজার হাজার মানুষ। তারপর থেকেই হিজাব বিদ্রোহ দমনে চরম নিপীড়ন শুরু করে ইরান। হিজাব নীতি লঙ্ঘনে শাস্তির তালিকা বেড়েই চলেছে সে দেশে। কয়েক দিন আগেই খবর মিলেছিল হিজাব না পরায় চাকরি খোয়াতে হয়েছে মহিলারাদের। কেড়ে নেওয়া হয়েছে গাড়িও। শুধু তাই নয় প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করতে বহু মানুষকে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে।