সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলায় মমতার (Mamata Banerjee) জয়ের আভাস মিলতেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অবিজেপি নেতা-নেত্রীরা শুভেচ্ছার বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন। গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে বিরাট জয়ের জন্য তৃণমূল সুপ্রিমোকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়াল, অখিলেশ যাদব থেকে ভূপেশ বাঘেল। এমনকী, সুদূর কাশ্মীর থেকেও বাংলার জননেত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিও। শপথগ্রহণের পরই টুইটারে প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিরোধী ঐক্য দেখে রাজনৈতিক মহলের দাবি, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি বিরোধিতার মুখ হয়ে উঠছেন মমতা।
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি দিল্লির মসনদে বসার পর থেকেই তাঁর বিরোধিতার জন্য জোট বাঁধার চেষ্টা করছেন বিরোধীরা। কখনও তা হয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে। কখনও আবার তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন করে। আর এই তৃতীয় ফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে জনসভাও করেছিলেন তিনি। তাঁর আমন্ত্রণে সেই জনসভায় হাজির ছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কানিমোঝি, শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব-সহ প্রায় সকল মোদি বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। তবে লোকসভা ভোটে উল্লেখযোগ্য ফল করতে পারেনি এই জোট। উলটে বাংলায় ভাল ফল করে বিজেপি।
[আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক, ‘মমতা দিদি’র শপথের পর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী মোদির]
এবার একুশের মহারণে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সকলেই প্রায় মমতাকে নৈতিক সমর্থন করেছিলেন। এমনকী, তাঁর হয়ে প্রচার করতে বাংলায় এসেছিলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চনও। ভোটের ফল ঘোষণার পরই তৃণমূলনেত্রীকে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসিয়ে দেন তাঁরা। এদিন কুরসিতে বসার পরই সকলকে ধন্যবাদ জানালেন তিনি। জয়ের পর প্রথম ভাষণেই মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলা গোটা দেশকে বাঁচিয়ে দিল। যা দেখে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের ভরকেন্দ্র বাংলাকেই করতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। আর এই বিরাট জয়ের পর সেই আন্দোলনের পুরোধা হয়ে উঠবেন মমতাই।
এদিন টুইটারে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি বিজেপি বিরোধিতা নিয়েও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলার জননেত্রী। যেমন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা লিখেছেন, “বাংলা ঘৃনা ও বিভাজনের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। উন্নয়নের জন্য ভোট দিয়েছেন।” আবার এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারকে লেখেন, “দেশের মঙ্গলের জন্য আপনার সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে রয়েছি।”
তাৎপর্যপূর্ণ মমতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন রাহুল গান্ধীও। এদিন তাঁকেও জবাব দিয়েছেন মমতা। দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় রাজনীতির অন্দরে একটা দ্বন্দ্ব চলছে, মমতা নাকি রাহুল, কে হবে বিজেপি বিরোধিতার প্রধান মুখ। সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে কংগ্রেসের ফলাফল উল্লেখযোগ্য নয়। এমনকী, রাহুলের প্রচারের পরও কেরলে ক্ষমতায় ফিরতে ব্যর্থ হয়েছে ইউডিএফ জোট। এদিকে হাজার প্রতিকূলতাকে হারিয়ে বিরাট জয় পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মুহূর্তে রাহুল গান্ধীর চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রহণযোগ্যতা বেশ কয়েকগুণ বেশি।