সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে (Bangladesh) হিন্দুহত্যায় ভারত-সহ আন্তর্জাতিক চাপের মুখে এবার মুখরক্ষার খেলা শুরু করলেন মহম্মদ ইউনুস। লজ্জা ঢাকতে লোকদেখানো গ্রেপ্তারির পর এবার বাংলাদেশ পুলিশের তরফে বার্তা দেওয়া হল, দীপু দাসকে (Dipu Das Murder) বাঁচানো যেত যদি তাঁরা সঠিক সময়ে খবর পেতেন। শুধু তাই নয়, অভিশপ্ত সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল তার বিস্তারিত বর্ণনাও দেওয়া হয়েছে পুলিশ আধিকারিকের তরফে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম 'দ্য ডেইলি স্টার'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মহম্মদ ফারহাদ হোসেন। তিনি বলেন, রাত ৮টার দিকে এক সহকারি সাব-ইনস্পেক্টর তাঁকে এই ঘটনার কথা জানান। যে কারখানায় দীপু কাজ করতেন সেটি পুলিশের দপ্তর থেকে ১৫ কিমি দূরে। সেখান থেকে ভালুকা থাকার দূরত্ব তুলনামূলক কম। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রওনা দেই। যদিও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় তখন শত শত মানুষের ভিড়। কারখনার গেটে পৌঁছে আমরা দেখি উত্তেজিত ভিড় সেই মৃতদেহ দুই কিমি দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যার জেরে প্রায় ১০ কিমি যানজট তৈরি হয়। ৩ ঘণ্টার জন্য গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ফারহাদ বলেন, ঠিক সময়ে ফোন করা হলে দীপুকে বাঁচানো যেত কিন্তু তাঁদের কাছে কোনও ফোন আসেনি। ভালুকা থানার ওসিও একই দাবি করেছেন। যদিও কারখানার ম্যানেজার সাকিব মাহমুদ অন্য দাবি করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ দীপুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানির অভিযোগ তুলে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে কারখানার শীর্ষ কর্তারা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করেন। তাতে অবশ্য কাজ হয়নি। সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে ওই যুবকের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁকে একটি ঘরে বসিয়ে রেখে রাত ৮টা নাগাদ পুলিশে খবর দেওয়া হয়। রাত ৮টা ৪৫ নাগাদ উত্তেজিত জনতা কারখানার গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে দীপুকে বের করে আনে। শুরু হয় গণধোলাই। মারের চোটে তার মৃত্যু হলে দেহ গাছে ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে হিসেব মতো, খবর পাওয়ার পর পুলিশ এলে দীপুকে উদ্ধার করা যেত। কারণ পুলিশের হাতে ৪৫ মিনিট সময় ছিল। তবে বাস্তবে নারকীয় সেই হত্যাকাণ্ডের পরও পুলিশের দেখা মেলেনি।
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেখানকার শ্রমিক এবং স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদিও সবটাই লোকদেখানো বলে অভিযোগ উঠেছে ইউনুস প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, দীপুর বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানিমূলক মন্তব্যের কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। বিষয়টি ভারতের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, "বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। দীপুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’’
