সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাসুদ আজহার কি সত্যিই কিডনির অসুখ নিয়ে পাকিস্তানের হাসপাতালে ভরতি? নাকি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে নিহত হয়েছে? এমনই ধন্দ তৈরি করে দিল সাম্প্রতিক একটি টুইট। অভিষেক সিং নামে এক যুবক টুইটারে দাবি করছেন, পাকিস্তানের সমস্ত রিপোর্টে জইশ প্রধান নিহত – এমন ইঙ্গিত আছে। তাঁর দাবি, পাকিস্তান এই সত্য গোপন করে বলছে, মাসুদ কিডনির সমস্যায় অত্যন্ত অসুস্থ এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কয়েকদিন পর তারাই জানাবে, মাসুদ আজহার কিডনির অসুখে ভুগেই মারা গিয়েছে। ভারতের দ্বিতীয় সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে খাটো প্রতিপন্ন করতে পাকিস্তান এই স্ট্র্যাটেজিই নিয়েছে বলে দাবি অভিষেকের। টুইটারে তাঁর এই বক্তব্যের পরই তা নেটিজেনদের আকর্ষণ করেছে। বহুবার রিটুইট হয়েছে অভিষেকের এই টুইট। অনেকেই অভিষেক মতামত সমর্থন করে জানিয়েছেন,মাসুদ আজহারের অস্তিত্ব নিয়ে তাঁদের মনেও সংশয় তৈরি হয়েছে। কেউ আবার জানাচ্ছেন, জইশ প্রধানের মৃত্যুর খবর সত্যি হলে, তা হবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় বায়ুসেনার সবচেয়ে বড় সাফল্য।
[ভারত-পাক সীমান্তে অভিনন্দনের পাশে কে ওই মহিলা? জানুন তাঁর পরিচয়]
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার বোমারু বিমান অভিযানে বহু জঙ্গি ঘাঁটি নির্মূল হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু জঙ্গির। যদিও বায়ুসেনা বাহিনীর তরফে স্পষ্টই বলা হয়েছে, ঠিক কতজন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে, তা বলার সঠিক সময়ে আসেনি। পাকিস্তানের তরফে বারবারই বালাকোটে জঙ্গি নিধনের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তবু ভারতের এই এয়ারস্ট্রাইক সর্বস্তরে আলোচনার মুখ্য বিষয়বস্তু। তাতেই জল্পনা উঠছে, তাহলে কি মাসুদ আজহারও নিহত হয়েছে ভারতের দ্বিতীয় সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে? অভিষেক সিংয়ের টুইট সেই জল্পনাই আরও উসকে দিল।
জইশ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার যে পাকিস্তানেই রয়েছে, তা একাধিক বয়ানে কার্যত স্বীকার করেছেন সেদেশের বিদেশমন্ত্রী। আজহারের শারীরিক অবস্থাও যে ভাল নয়, তাও তিনি জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, কিডনির অসুখ নিয়ে রাওয়ালপিণ্ডির হাসপাতালে ভরতি মাসুদ। সেখানে ডায়ালিসিস চলছে। কিন্তু অভিষেক সিংয়ের টুইট বলছে, এটা পাকিস্তানের বানানো গল্প মাত্র। মাসুদ আজহার আদৌ আর বেঁচেই নেই। পাকিস্তানেরই একাধিক রিপোর্টে সেই ইঙ্গিত রয়েছে। মাসুদকে নিয়ে একেবারে রক্ষণাত্মক কৌশল নিচ্ছে পাক প্রশাসন। তার পরবর্তী পদক্ষেপ হতে চলেছে এই ঘোষণা করা যে, কিডনির অসুখে ভুগে জইশ প্রধানের মৃত্যু হয়েছে।
[ফের মুখ পুড়ল ইমরানের, সার্জিক্যাল স্ট্রাইককে সিলমোহর দিল জঙ্গি মাসুদের ভাই]
আসলে আন্তর্জাতিক স্তরে এধরনের জঙ্গিদের মৃত্যু অথবা জীবিত দশা প্রমাণ মোটেই সহজ কাজ নয়। এক্ষেত্রে দাবির সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর ন্যূনতম প্রমাণ পেশ করার প্রয়োজন হয়। ঠিক যেভাবে ২০১১ সালে মার্কিন নেভি সিল পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ অভিযানে আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে মারার পর বাড়িতে ঢুকে তার মৃতদেহটিও নিয়ে গিয়েছিল, প্রমাণ হিসেবে পেশ করার জন্য। ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে তেমন কোনও প্রমাণ নেই বলেই তাঁরা নিজেরা কোনও দাবি করেননি। এমনকী বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে বিবৃতিতে জানিয়েছে, মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা এখনই বলা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে অভিষেক সিংয়ের টুইট বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। পাকিস্তানের স্বভাব অনুযায়ী এমন কূটনৈতিক চালই তাদের থেকে প্রত্যাশিত।
The post ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে কি খতম মাসুদ আজহার? জল্পনা তুঙ্গে appeared first on Sangbad Pratidin.