সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোপন বহু ডিজিটাল নথি আফগানিস্তানে (Afghanistan) ফেলেই পালিয়েছেন মার্কিন গুপ্তচরেরা। এবার সেই সমস্ত গোপন নথি পাচার হয়ে গেল পাকিস্তানে (Pakistan)। যেখান থেকে হাতবদল হয়ে তথ্য পৌঁছে যেতে পারে চিনেও। যা নিয়ে বেড়েছে চিন্তা। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, একদিন আগেই আফগানিস্তানের জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান। ভেঙে পড়া আফগান অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার নামে আসলে তা নিয়ন্ত্রণ করাই ইসলামাবাদের উদ্দেশ্য বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যা থেকে তালিবানের সঙ্গে পাক যোগ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
এর পরই তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনটি বিমান ভরতি করে আফগানিস্তান থেকে ‘গোপন নথি’ তালিবান (Taliban Terror) ইসলামাবাদে পাঠিয়েছে। বলা ভাল, সেই নথি নিয়ে গিয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)। আর সেই কাজের তদারকি করেছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত মনসুর আহমেদ। সেই ‘গোপন নথি’ কী, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। অনেকে মনে করছেন, আদতে সেগুলি আমেরিকার ফেলে যাওয়া বহু ডিজিটাল তথ্য।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের বিজ্ঞাপনে কলকাতার উড়ালপুলের ছবি, যোগীকে তুলোধোনা তৃণমূলের]
যদিও অন্য একটি সূত্রের খবর, সেগুলি আদতে আফগান ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অফ সিকিউরিটির (এনডিএস) গোপনীয় নথিপত্র, হার্ড ডিস্ক ও অন্য নথি। প্রাক্তন আফগান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কাজ করা এক ব্যক্তি এ তথ্য ফাঁস করেছেন। এনডিএস হল আফগান গুপ্তচর ও নিরাপত্তা সংস্থা। সরাসরি প্রেসিডেন্টের কাছে রিপোর্ট করত তারা। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমন করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। আমেরিকার সহযোগী সংস্থা হিসেবে তারা বারবার তালিবানের হামলার শিকার হয়েছে। কাবুল পতনের পর বহু এনডিএস এজেন্ট ভারত, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন।
সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার নানাবিধ সাহায্য নিয়ে কাবুলে এসেছিল তিনটি সি-১৭০ বিমান। নথিপত্র বোঝাই করে সেগুলি ফিরে গিয়েছে। আফগানিস্তানের পূর্ববর্তী আশরফ ঘানি-সহ বহু সহযোগী দেশ এবং শত্রু দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এনডিএস-এর কাছে সংরক্ষিত ছিল। শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আইএসআই তার নিজস্ব ব্যবহারের জন্য তথ্যগুলি ‘ডিসাইফার’ করবে, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিরাট ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তা তালিবান সরকারকে পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীল করে তুলবে বলেও ওই সূত্রের দাবি। তাঁর আরও দাবি, এই তথ্যগুলি সবই ‘প্রাসঙ্গিক’। কারণ, তালিবান যে এভাবে ক্ষমতা দখল করবে, তা পূর্ববর্তী আফগান সরকার প্রত্যাশা করেনি।
[আরও পড়ুন: TMC in Tripura: অভিষেকের সফরেই ত্রিপুরায় স্টিয়ারিং কমিটি গড়তে চায় তৃণমূল, বিশেষ নজর মহিলা ভোটে]
সামরিক বাহিনীরও এই নথিপত্রের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কারণ তথ্যের দায়িত্বে থাকা কর্মীরা কাজে ফিরে আসেনি। আগে থেকেই আফগান সেনা ও গুপ্তচর সংস্থায় নিজেদের লোক ঢুকিয়ে রেখেছিল আইএসআই। এখন এই সমস্ত তথ্য হাতে পাওয়ায় তালিবানের উপর সেই পাক নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার হল।