সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আল কায়দা নয়, আফগানিস্তানে (Afghanistan) আতঙ্কের নয়া নাম ইসলামিক স্টেট (খোরাসান)। ইরাক ও সিরিয়া ছাড়িয়ে এবার কাবুলিওয়ালার দেশে আধিপত্য স্থাপনের লড়াই শুরু করেছে আন্তর্জাতিক জেহাদি সংগঠনটি। এবার দেশটির একাধিক মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করল আইএস।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার দখলে মারিওপোল, এবার ডোনেৎস্ক ও খারকভে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ পুতিন বাহিনীর]
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফের একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী হামলা চালায় জঙ্গিরা। মৃত্যু হয় কমপক্ষে পাঁচজনের। আহত হন ৫০। এবার ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (ISIS)। শুধু তাই নয়, শুক্রবার কুন্দুজ প্রদেশের একটি শিয়া মসজিদে হামলা চালায় আইএস। পবিত্র রমজান মাসে মাওলাই সেকান্দার মসজিদে প্রার্থনার জন্য জড়ো হয়ছিলেন বহু মানুষ। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ জানিয়েছে, হামলায় অন্তত বেশ কয়েকটি শিশু-সহ ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানে আল কায়দা ও তালিবানকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে আইএস। বেশকয়েকবার আল কায়দার সঙ্গে লড়াই হয়েছে আইএস জেহাদিদের। বহু আল কায়দা জঙ্গি ইতিমধ্যে আইএসে নাম লিখিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তালিবান ও আইএস দুটোই সুন্নি জেহাদি সংগঠন। তবে ইসলামের ব্যাখ্যা ও মতবাদ নিয়ে দুই দলের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে। আইএসের দাবি, তালিবান আমেরিকার ‘মোল্লা ব্র্যাডলি’ প্রকল্পের অঙ্গ। ওই মৌলবাদীদের মতে, ওই প্রকল্পে জেহাদি সংগঠনের একাংশকে নিজেদের দিকে টেনে সেগুলিকে দুর্বল করে দেয় আমেরিকা।
২০১৫ সালে আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশে আইএসের খোরাসান শাখা তৈরি হওয়ার পরেই বিরোধ বাড়ে দুই গোষ্ঠীর। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় দু’পক্ষের নানা গোষ্ঠীর। কূটনীতিকদের মতে, আইএসের মোকাবিলা করতেই তালিবানকে সমর্থন শুরু করে রাশিয়া। পরে নানগরহর প্রদেশে আমেরিকান অভিযানের ফলে আইএস বড় ধাক্কা খায়। কিন্তু ফের শক্তি সংগ্রহ করছে তারা।
উল্লেখ্য, মূল ইসলামিক স্টেট বা ‘ইসলামিক স্টেট ওফ ইরাক এন্ড সিরিয়া’-র (ISIS) শাখা সংগঠন হচ্ছে ইসলামিক স্টেট (খোরাসান)। এর যোদ্ধারা, নিহত ISIS প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির অনুগামী। এক্ষেত্রে খোরাসান বলতে ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশকে বোঝায়। মূলত আফগানিস্তানের নানগরহার প্রদেশেই জেহাদি সংগঠনটির মূল ঘাঁটি। মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করাই ISIS (K) সংগঠনের মূল লক্ষ্য। তাজিকিস্তান,উজবেকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলিতে শিকড় ছড়ানোর চেষ্টা করছে তারা।