মোহনবাগান: ২ (পেত্রাতস-২ পেনাল্টি)
বেঙ্গালুরু এফসি: ২ (সুনীল-পেনাল্টি, রয় কৃষ্ণ)
পেনাল্টি শুটআউটে (৪-৩) জয়ী মোহনবাগান
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমাদের খুঁজলে পাবে সোনায় লেখা ইতিহাসে…। আরও একটা বিজয় গাঁথা স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখল মোহনবাগান। দমবন্ধ করা লড়াই শেষে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে প্রথমবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। কৃতিত্ব যতখানি অফুরান শক্তি দিয়ে ১২০ মিনিট ধরে ফুটবলারদের, ততটাই তাঁদের নেপথ্যে থাকা মানুষটির। তিনি আর কেউ নন, মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো।
মোহনবাগানের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তিনি ছেঁটে ফেলেছিলেন এককালে সবুজ-মেরুন জার্সিতে মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো রয় কৃষ্ণকে। ভরসা করে দলে এনেছিলেন অজি স্ট্রাইকার পেত্রাতসকে। আবার রক্ষণে দেশের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার সন্দেশ ঝিঙ্গানের পরিবর্তে কোচ বেছে নিয়েছিলেন প্রীতম কোটালকে। বড় নামে নয়, আদর্শ টিমম্যানদের উপরই ভরসা রেখেছিলেন স্প্যানিশ কোচ। তবে ফেরান্দোর স্ট্র্যাটেজি নিয়েও কম সমালোচনা হয়নি। কিন্তু আইএসএলে এহেন পারফরম্যান্সের পর বলার অপেক্ষা রাখে না, ফেরান্দোই সেরা। কোনও সমালোচনায় কান না দিয়ে নিজের স্ট্র্যাটেজিতেই ভরসা রেখে ঠান্ডা মাথায় ক্লাবকে কাঙ্ক্ষিত ট্রফি এনে দিলেন তিনি। আজ প্রীতমের ধারাবাহিকতা আর পেত্রাতসের অনবদ্য ফর্মকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
[আরও পড়ুন: আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হতেই সরল ATK, দলের নতুন পরিচয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস]
২০২১ সাল। মাণ্ডবির তীরে যাবতীয় স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে মাথা নুইয়ে শহরে ফিরেছিল মোহনবাগান। চোখের জলে ভেসেছিলেন সবুজ-মেরুন (Mohun Bagan) সমর্থকরা। দু’বছর পর কি ছবিটা বদলাবে? প্রথমবার আইএসএল ট্রফি আসবে গঙ্গাপারের ক্লাবে? একবুক আশা নিয়ে কেউ পৌঁছে গিয়েছিলেন ফতোরদা স্টেডিয়ামে তো কেউ সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়ে বসে পড়েছিলেন টিভির পর্দার সামনে। নাহ্, এবার আর নিরাশ হতে হয়নি। মাণ্ডবির তীরেই রচিত হল জয়ের ইতিহাস।
গত বছরই কাতার বিশ্বকাপে রুদ্ধশ্বাস একটা ফাইনালের সাক্ষী থেকেছিল ফুটবলবিশ্ব। ফরাসি বাহিনীকে চাপে ফেলে একবার এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা তো পর মুহূর্তেই আবার গোল শোধ করে পালটা দিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপেরা। সেই ম্যাচেও বড়সড় ভূমিকা ছিল পেনাল্টি। গোয়ায় আইএসএল ফাইনালে সেই স্মৃতিই ফেরালেন সুনীল ছেত্রী, পেত্রাতসরা। পুরনো দলের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন বাগানের প্রাক্তনী রয় কৃষ্ণ। একটি ফাউল করলেও পরে প্রায়শ্চিত্ত করে একটি গোলও করেন। কিন্তু শেষ হাসি হাসা হল না তাঁর।
এদিকে যে সুনীল ছেত্রীকে ফাইনালে বসিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বেঙ্গালুরু কোচ গ্রেসন, সেই সুনীলও পরিবর্ত হিসেবে ৩ মিনিটে নামার সুযোগ পেয়ে আবার বুঝিয়ে দেন, তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। সেই আত্মবিশ্বাস, একাগ্রতার সঙ্গে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। ম্যাচের ফল তাঁদের পক্ষে না গেলেও সুনীলের পেনাল্টি শটটি বহু বছর মনে রাখবেন ফুটবলপ্রেমীরা।