সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউরোপে ছড়াচ্ছে জেহাদের শিকড়। মুসলিম শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে কার্যত মহাবিপদে পড়েছে ফ্রান্স, জার্মানি ও সুইডেনের মতো শান্ত দেশগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে ভিয়েনা হামলার দায় স্বীকার করল আন্তর্জাতিক মুসলিম জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (Islamic State)।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনী অনিশ্চয়তায় হিংসা ছড়াতে পারে বিদেশি শক্তি, আশঙ্কা মার্কিন গোয়েন্দাদের]
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় মূল হত্যাকারী ছিল কুজতিম ফেজুলাই। বছর কুড়ির ফেজুলাইকে গুলি করে খতম করেছে পুলিশ। সে ছিল ইসলামিক স্টেটের আত্মঘাতী জঙ্গি। ‘লোন উলফ’ হামলাকারী ছিল সে। ভিয়েনার রাস্তায় কালাশনিকভ রাইফেল হাতে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেছে সে নিজেই। অতীতে জেল খাটা আসামি ফেজুলাই ম্যাসিডোনিয়া থেকে এসে অস্ট্রিয়ায় অভিবাসী হিসাবে বাস করছিল। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এমনই সব তথ্য। তার গুলিতে জখম হন অন্তত ১০ নিরীহ পথচারী।
সোমবার রাতে ভিয়েনার হামলার পরই অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্টিয়ান ক্রুজ জানান, “মুসলিম জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এটি ইসলামিক স্টেটের লোন উলফ অ্যাটাক। এটা এই বছরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলার ঘটনা।” এরপরই মঙ্গলবার রাতে এই হামলার দায় স্বীকার করে অনলাইনে বিবৃতি দেয় ইসলামিক স্টেট। তারা জানিয়েছে, ‘তাদের লোন উলফ জেহাদি কুজতিম ফেজুলাই কাফেরদের হত্যা করে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। তার এই পবিত্র প্রচেষ্টা বৃথা যাবে না। আগামী দিনে গোটা ইউরোপ, আমেরিকা এরকম বহু ঘটনার সাক্ষী থাকবে। খিলাফতের লক্ষ্যে আমরা এবাবেই একদিন পৌঁছব।’ পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার স্থানীয় সময় রাত আটটা ইহুদিদের উপাসনাস্থল সিনাগগের কাছে এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে হামলা চালিয়েছিল ফেজুলাই নামের ওই জেহাদি। হামলা চালানোর আগে কালাশনিকভ রাইফেল হাতে ফেসবুকে নিজের ছবি পোস্ট করেছিল সে। সে জেহাদের জন্য শহিদ হতে চায় বলে জানিয়েছিল। এই ঘটনার পর তদন্ত চালিয়ে ভিয়েনার ১৮টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করা হচ্ছে। স্থানীয় দু’টি মসজিদের মৌলবিকেও আটক করা হয়েছে। এরা সবাই ইসলামিক স্টেটের প্রতি অনুগত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অভিজাত ভিয়েনা শহরের প্রাণকেন্দ্রের ছ’টি জায়গা– গ্রাবেন, বুয়র্ন মার্কেট, সালজগ্রে, মরজিনপ্লাত, ফ্লিস মার্কেট, সিতেনতিগাসে টেম্পল এলাকায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। পুলিশের সন্দেহ, অন্তত পাঁচ ছ’জন জঙ্গি একসঙ্গে এই হামলা চালিয়েছে। জঙ্গি হামলার জেরে ভারতীয় দূতাবাসের নিরাপত্তা কঠোর ও আঁটসাঁট করা হয়েছে।