সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দশ মাসে ইজরায়েলের হামলায় 'মৃত্যুপুরী' তে পরিণত হয়েছে গোটা গাজা। হামাস জঙ্গিদের সমূলে নিধন করতে ভূখণ্ডটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। চারপাশে মৃতদেহের স্তূপ, স্বজনহারা কান্না। রবিবারেও সেখানে জারি রইল মৃত্যুমিছিল। গাজার একটি হাসপাতালে ইজরায়েলের অগ্নিবর্ষণে নারী ও শিশু-সহ প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১৫ জন। আহতের সংখ্যা বহু। এই হানাহানির মাঝেই সেখানে নতুন আতঙ্ক হয়ে মাথা চারা দিয়েছে পোলিও।
যতদিন যাচ্ছে আরও ভয়াবহ হচ্ছে গাজার পরিস্থিতি। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। ঠিক মতো পৌঁছছেনা ত্রাণ। তীব্র হয়েছে খাদ্য সংকট। প্যালেস্তিনীয়দের কানের কাছে সর্বক্ষণ বাজছে মৃত্যুঘণ্টা। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, এদিন গাজার ডের-আল-বালাহ হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে ইজরায়েলি ফৌজ। এমনটাই অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এই হামলায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ১৫ জনের। মৃতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। হামাস জঙ্গিদের নিধনে গাজার হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থান, শরণার্থী সর্বত্র হামলা চালানো হচ্ছে। কারণ তেল আভিভের অভিযোগ, ওই জায়গাগুলোতে ঘাঁটি গেড়েছে জেহাদিরা।
এদিকে ইজরায়েলের লাগাতার হামলা অন্যদিকে, তলানিতে ঠেকেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। প্রকোপ বাড়ছে নানা ভাইরাসের। যার মধ্যে আতঙ্ক ধরাচ্ছে পোলিও-র বাড়বাড়ন্ত। গাজার বিভিন্ন ড্রেন থেকে নেওয়া নমুনায় এর চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এনিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সংক্রমণের কারণে যে লক্ষণগুলো দেখা গিয়েছে তাতে কারও ঠিকমতো চিকিৎসা করা হচ্ছে না। কিন্তু ইজরায়েলের সেনার দাবি, প্যালেস্তিনীয়দের জন্য টিকা আনতে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কাজ করা হবে। এই আবহে শোনা যাচ্ছে, সোমবার আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দেবেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। চলমান যুদ্ধ নিয়ে তিনি কথা বলবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে।
বলে রাখা ভালো, কয়েকদিন আগেই গাজায় শান্তির পথ খুঁজতে আরও একদফা বৈঠকে হয়েছে মিশরে। কিন্তু তার নিটফল শূন্যই। কোনও সমাধানই মেলেনি এই বৈঠক থেকে। আমেরিকার মধ্যস্থতায় এই আলোচনায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল ইজরায়েল ও হামাস। কিন্তু কোনও পক্ষই একে অপরের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়নি। ফলে কবে বন্ধ হবে এই যুদ্ধ? কবে থামবে মৃত্যুমিছিল? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরাই। তবে আমেরিকায় গেলে নেতানিয়াহু সেখান এই যুদ্ধ নিয়ে কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর সকলের। এখনও পর্যন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ৩৮ হাজার।