সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০ মাস পেরিয়েও গাজায় জারি রয়েছে হামাস-ইজরায়েল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। এত হানাহানি, রক্তপাতের মাঝে এবার সম্মুখ সমরে ইজরায়েল ও লেবাননের হেজবোল্লা গোষ্ঠী! হামলা পালটা হামলায় নতুন করে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। যেকোনও সময় লেবাননে ভয়ংকর আঘাত হানতে পারে তেল আভিভ। এই পরিস্থিতিতে লেবাননে থাকা নাগরিকদের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতীয় দূতাবাস। জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা।
গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলর বুকে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। তার বদলা নিতে গাজায় যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন ইহুদি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু এই মুহূর্তে তেল আভিভকে লড়াই করতে হচ্ছে তিনটি ফ্রন্টে। গাজায় হামাস, লেবাননে হেজবোল্লা ও ইরান। এর মধ্যে গত কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত হয়ে আছে ইজরায়েল-লেবানন সীমান্ত। হামলা পালটা হামলাও জারি ছিল। এর মাঝেই গত ২৭ জুলাই, শনিবার ইজরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির এক ফুটবল স্টেডিয়ামে আছড়ে পড়ে ইরানের মদতপুষ্ট হেজবোল্লার রকেট। এমনই দাবি তেল আভিভের। এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, এর বদলা নিতে পালটা মার দিয়েছে ইজরায়েলি ফৌজ। লেবাননে সশস্ত্র সংগঠনটির ঘাঁটি টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে। নিহত হয়েছে ১২ জন। এই আক্রমণ আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দিয়ে নেতানিয়াহু বলেছেন, "হেজবোল্লাকে আরও বড় মূল্য চোকাতে হবে।" ফলে এবার ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে যেকোনও সময় সরাসরি যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা করছে আন্তর্জাতিক মহল।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় ফের বন্দুকবাজের হামলা! পার্কের মধ্যে এলোপাথাড়ি গুলি মৃত ১, আহত ৬]
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে লেবাননের ভারতীয়দের নিয়ে। নাগরিকদের জন্য বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে লেবাননের ভারতীয় দূতাবাস। সকলকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, 'বর্তমান আঞ্চলিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভারতীয়দের উদ্দেশে একটি বার্তা দেওয়া হচ্ছে। লেবাননের সমস্ত ভারতীয় নাগরিক এবং যাঁরা লেবাননে ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন তাঁরা সতর্কতা অবলম্বন করুন। এবং বেইরুটে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে সকলকে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাদের ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যেকোনও সাহায্যের জন্য cons.beirut@mea.gov.in- এই ইমেলে ও এমারজেন্সি নম্বর 96176860128তে যোগাযোগ করুন।' প্রসঙ্গত, ২৭ জুলাই ইজরায়েলের বুকে হওয়া হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু এখনও এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে হেজবোল্লা।
সমর বিশ্লেষকদের মতে, ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে যে সংঘাত শুরু হয়েছে তাতে হামাসের ষড়যন্ত্রই কার্যত সফল হচ্ছে। গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইহুদি দেশটিতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে হেজবোল্লা। তাদের যুক্তি ছিল গাজায় হামাসকে সমর্থন জানিয়েই এই আক্রমণ শানানো হচ্ছে। পাশাপাশি লোহিত সাগর উত্তপ্ত করে রেখেছে ইরানের মদতপুষ্ট ইয়েমেনের হাউথিরা। কয়েকদিন আগেই তারা তেল আভিভের মার্কিন দূতাবাসের সামনে ড্রোন হামলা চালায়। সেখানেও ঘটে প্রাণহানি। ফলে সবদিক থেকে ইজরায়েলকে কার্যত ঘিরে ফেলেছে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে গাজায় হামাস কোণঠাসা হয়ে গেলেও ইজরায়েলকে রক্তাক্ত করছে ইরানের মদতপুষ্ট সংগঠনগুলো।