সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রমজানের আগেই ফেরাতে হবে পণবন্দিদের। নয়তো রাফায় আরও জোরদার হবে আক্রমণ। হামাসকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এমনই হুমকি দিল ইজরায়েল। গত কয়েকদিনে ইজরায়েলি সেনার অভিযানে বিপর্যস্ত রাফা। মিশর সীমান্তবর্তী এই শহরই সাধারণ মানুষের শেষ আশ্রয়। কিন্তু ইহুদি দেশটির হামলা, অনাহার, রোগব্যাধিতে কার্যত কোনঠাসা হয়ে গিয়েছে শহরটি। আগামিদিনে রাফার ভয়ংকর পরিণতি নিয়ে আতঙ্কের প্রহর গুনছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
এখনও হামাস জঙ্গিদের হাতে বন্দি রয়েছে শতাধিক ইজরায়েলি। যা নিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের উপর। লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছে পণবন্দিদের পরিবার। সিএনএন সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে হামাসকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইজরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বেনি গান্তাজ। তাঁর হুমকি, “গোটা বিশ্বের জানা উচিত, হামাসের জানা উচিত রমজানের আগে আমাদের পণবন্দিদের ফেরাতে হবে। না হলে এর ফল ভয়ংকর হবে। রাফায় লড়াই আরও বাড়বে।”
গান্তাজ আরও বলেন, “আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, হামাসের কাছে একটা পথ খোলা আছে। তারা আত্মসমর্পণ করে আমাদের মানুষদের ছেড়ে দিক। তাহলে গোটা গাজার মানুষ পবিত্র রমজান উদযাপন করতে পারবেন। আনন্দে মেতে উঠতে পারবে।” ইজয়ারেলের মন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারির পর উদ্বেগ বাড়ছে রাফা সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষের।
বলে রাখা ভালো, রাফা শহরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ত্রাণ সরবরাহকারী সংগঠনগুলো। ইজরায়েলের হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু এবার হামাস জঙ্গিদের নিঃশেষ করতে এখানেও আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। অনাহারে ভুগছেন মানুষ। বাড়ছে নানা রোগের প্রকোপ। এহেন পরিস্থিতিতে ত্রাণ সংস্থা মেডেসিনস সানস ফ্রন্টিয়েরস সতর্ক করে বলেছে, রাফায় প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষের জীবন অনিশ্চিত। আর পালানোর পথ নেই। এদিকে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের অগ্রগতি হচ্ছে না ইজরায়েলের জন্যই।
[আরও পড়ুন: ‘মানুষের আদেশ পাইনি, তাই…’, পাক প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব ফিরিয়ে সরব বিলাওয়াল]
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ঘুমের মধ্যেই ৩৭ প্যালেস্তিনীয়র প্রাণ কেড়েছিল ইজরায়েলি সেনার সাঁড়াশি হানা। ইজরায়েল যখন হামলা চালায় তখন ঘুমিয়ে ছিলেন সকলেই। রাফায় ইজরায়েলি সেনার অভিযান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে বিশেষ অনুরোধ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে রাফায় যেন ইজরায়েল হামলা না চালায়। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় রাফা আসলে আমজনতার শেষ আশ্রয়। সেখানে হামলার আগে নাগরিকদের সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।