সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হামাস জঙ্গিদের সমূলে বিনাশ করতে হবে। এটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর। আর সেই কারণে গোটা গাজা ভুখণ্ডজুড়ে হামাস জঙ্গিদের ডেরা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। এই মুহূর্তে তেল আভিভের ‘হিটলিস্টে’ রয়েছে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ। মাস দুয়েক আগেই ইজরায়েলি বাহিনীর ড্রোন হামলায় মৃত্যু হয়েছিল কুখ্যাত এই তিন ছেলে ও নাতি-নাতনিদের। এবার নাকি ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর বোমাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছে হানিয়েহর পরিবারের ১০ সদস্য! এই হামলায় নাকি নিহত হয়েছে তার বোনও। এমনই দাবি জানিয়েছে গাজার ডিফেন্স এজেন্সি।
প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাসের নাম মুছে ফেলতে গাজায় তীব্র আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। খুঁজে খুঁজে হামলা চালানো হচ্ছে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোতে। গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে একের পর হামাসের শীর্ষ নেতাকে খতম করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। সংবাদমাধ্যেম গাজার ডিফেন্স এজেন্সি দাবি করেছে, মঙ্গলবার উত্তর গাজার আল-শাতি শরণার্থী শিবিরে আক্রমণ শানায় ইজরায়েল। ওই শিবিরের পাশেই ছিল হানিয়েহর বাড়ি। সেখানেও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এই হামলাতেই মৃত্যু হয় হানিয়েহর পরিবারের ১০ সদস্যের। নিহত হয় তার বোন জাহিরা হানিয়েহর।
[আরও পড়ুন: ‘ভিত্তিহীন এবং প্রতারণামূলক’, কাশ্মীর ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘে পাক বার্তায় তোপ ভারতের]
ইজরায়েলের এই হামলা নিয়ে বুধবার গাজার ডিফেন্স এজেন্সির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল, "ইজরায়েলর বিমানহানায় হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহর পরিবারের ১০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হানিয়েহর বোন জাহরাও রয়েছেন। কয়েক জনের দেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। সেগুলো উদ্ধার করার মতো পরিকাঠামো আমাদের কাছে নেই।" এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই মুখ খুলেছে আইডিএফ। তারা জানিয়েছে, "এই খবর আমাদের নজরে এসেছে। কিন্তু আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত নই।"
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে ইদের দিন আইডিএফ দাবি করে, হানিয়েহর তিন ছেলে আমির, হাজিম ও মহম্মদকে খতম করে দেওয়া হয়েছে। যখন তারা গাজায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালাতে যাচ্ছিল তখন তাদের উপর আঘাত হানা হয়। সেসময় হানিয়েহ আল জাজিরাকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ক্ষোভ উগরে বলেছিল, "প্রতিশোধ ও খুনের উদ্দেশেই অপরাধী শত্রুরা কাজ করে। তারা কোনও আইন মানে না। নেতাদের পরিবারকে আক্রমণ করাতেই তারা বিশ্বাসী।"
[আরও পড়ুন: ফের রক্তাক্ত আমেরিকা, বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত ৫, পুলিশ দেখেই আত্মঘাতী যুবক!]
বলে রাখা ভালো, হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহকে বহু দেশ হামাসের প্রধান হিসাবে গণ্য করে। নয়ের দশকের শেষ থেকে উত্থান শুরু হয় হানিয়েহর। হামাসের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিনের ‘ডান হাত’ বলে পরিচিত কুখ্যাত এই জঙ্গি। ২০০৬ সালে প্যালেস্টাইনের প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচিত হয়। গত বছর নভেম্বরে গাজায় তার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলি ফৌজ। আইডিএফের অভিযোগ ছিল, ওই বাড়িতে বসেই ৭ অক্টোবরের হামলার ছক কষা হয়েছিল। এখন ইজরায়েলের নজর রয়েছে কুখ্যাত এই জঙ্গির উপরে।