সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ইজরায়েলর প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। লক্ষ্য একটাই। হামাস জঙ্গিদের সমূলে বিনাশ করা। যে কারণে গত আট মাস ধরে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। কিন্তু এবার তারা কার্যত মেনে নিয়ে হামাসের নাম পুরোপুরী মুছে ফেলা অসম্ভব! কিন্তু এতে নিজের অবস্থান থেকে সরছেন না নেতানিয়াহু।
গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলর বুকে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। যার বদলা নিতে গাজায় যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন নেতানিয়াহু। তার পর থেকে জারি রয়েছে এই রক্তক্ষয়ী লড়াই। এই আট মাসে বহু হামাস নেতাকে খতম করেছে ইজরায়েলি ফৌজ। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জেহাদিদের ডেরা। কিন্তু বুধবার ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি ইজরায়েলের এক সংবাদমাধ্যমে জানান, "হামাস একটা আদর্শ। আমরা কখনও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারব না। তবে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী নিজেদের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" তাঁর এই বক্তব্যের পরই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কার্যালয়। সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হামাসের পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত গাজায় লড়াই চলবে।
[আরও পড়ুন: গালওয়ানের পুনরাবৃত্তি! ফিলিপিন্সের নৌসেনার উপরে হাতুড়ি-ছুরি নিয়ে বর্বরোচিত হামলা চিনের]
সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ফের আমেরিকার অবস্থান নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। এক ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন অস্ত্রের সরবরাহে বাধা দিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের জন্য রাফায় অভিযানের গতি শ্লথ হয়ে গিয়েছে। এটা অকল্পনীয় যে গত কয়েক মাস ধরে প্রশাসন ইসরায়েলকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটকে রেখেছে। আমাদেরকে হাতিয়ার দিন। আমরা দ্রুত এই কাজ সমাপ্ত করে দেব।” এদিন নেতানিয়াহুর দাবি উড়িয়ে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, “আমরা রাফার নিরীহ মানুষদের কথা ভেবে ভারী বোমাবর্ষণ আটকে গোলাবারুদের সরবরাহ স্থগিত রেখেছি। বাকি সব কিছুই সাধারণভাবেই চলছে।” এদিকে, হোয়াইট হাউসের তরফে বলা হয়েছে, ‘ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী কী নিয়ে কথা বলছেন তা আমাদের জানা নেই।’ তবে হাজার চাপ সত্ত্বেও রাফায় হামলা থামায়নি ইজরায়েল।
অন্যদিকে, ফের নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার ইজরায়েলি। গাজা যুদ্ধ ও পণবন্দিদের দ্রুত মুক্তির দাবিতেই তাঁদের এই বিক্ষোভ। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য সকলেই দায়ী করছেন নেতানিয়াহুকে। আট মাস পেরিয়েও গাজায় হামাসের ডেরায় বন্দি রয়েছেন শতাধিক মানুষ। গত মাসে বেশ কয়েকজন পণবন্দির দেহ উদ্ধার করেছে ইজরায়েলি বাহিনী। ফলে যতদিন যাচ্ছে ক্ষোভ বাড়ছে ইজরায়েলের অন্দরে।