সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭ অক্টোবর, ২০২৩। ইজরায়েলের বুকে বেনজির হামলা চালায় হামাস। প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি সংগঠনটির আক্রমণে প্রাণ হারান হাজারের উপর নিরীহ ইজরায়েলি। এই ঘটনার পরই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, কেন এত বড় হামলার কথা ঘুণাক্ষরেও টের পেল না ইজরায়েলি সেনা? কী করছিল দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ? এবার সেই দায় নিয়ে ইস্তফা দিলেন ইজরায়েলি সেনার গোয়েন্দা প্রধান মেজর জেনারেল হারুন হালিভা।
৭ অক্টোবর দিনটি ইজরায়েলের ইতিহাসে আরেকটি রক্তাক্ত দিন হিসাবে লেখা থাকবে। হামাসের হামলায় সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলেন ১২০০ ইজরায়েলি। জঙ্গিরা পণবন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল আড়াইশোর উপর নাগরিককে। সেই হামলার বদলা নিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার পর থেকে ৭ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। একে একে নিকেশ করা হচ্ছে জেহাদিদের। কিন্তু সেই ৭ অক্টোবরের কালো স্মৃতি তাড়া করে বেরাচ্ছে হারুন হালিভাকে। সেদিন যদি একবারের জন্যও বুঝতে পারতেন হামাসের ষড়যন্ত্র, তাহলে রোখা যেত অনেক কিছু। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধটাই হয়তো হত না। সেই অনুশোচনাতে ভুগেই সোমবার পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মালদ্বীপের নির্বাচনে ‘চিনপন্থী’র জয়! ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব টিকবে?]
আল জাজিরা সূত্রে খবর, নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ পত্রে হালিভা লিখেছেন, 'আমার উপর ভরসা করে, বিশ্বাস রেখে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তা পালনে আমি ব্যর্থ। ৭ অক্টোবর, ২০২৩। শনিবার হঠাৎই ইজরায়েলে আঘাত হানে হামাস জঙ্গিরা। আমার অধীনে থাকা গোয়েন্দা বিভাগ সেই সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেনি। তার পর থেকে যা হয়েছে তা সকলের জানা। সেই কালো দিনের স্মৃতি আমাকে তাড়া করছে। এই যুদ্ধের ভয়ানক ব্যথা আমাকে সারাজীবন বয়ে নিয়ে যেতে হবে।" হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই প্রথম কোনও উচ্চ পদস্থ ইজরায়েলি সেনা আধিকারিক পদত্যাগ করলেন। হালিভার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে তাঁর কাজের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেসও।
উল্লেখ্য, ইজরায়েলের মারে গাজায় কার্যত কোণঠাসা হয়ে গিয়েছে হামাস। গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক জেহাদিদের ডেরা। তবে জঙ্গিদের হাতে এখনও পণবন্দি রয়েছে শতাধিক ইজরায়েলি। তাঁদের মুক্তি আলোচনা চলছে নানা মহলে। যত দিন যাচ্ছে তাঁদের ফেরানো নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ইজরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে। আর এদিকে ইজরায়েলি সেনার রক্তক্ষয়ী অভিযানে গাজায় জারি রয়েছে মৃত্যুমিছিল। ইতিমধ্যেই সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।