সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ত্রাণ নিতে গিয়ে গাজায় মৃত্যু সাধারণ মানুষের। অভিযোগের তীর ইজরায়েলের দিকে। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রক ক্ষোভ উগরে জানিয়েছে, ইজরায়েলি সেনার আক্রমণে দুটি ত্রাণ শিবিরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৯ জন প্যালেস্তিনীয়। আহত শতাধিক। গত মাসেই ইজরায়েলি ফৌজের এলোপাথাড়ি গুলিতে ত্রাণ বিলি কেন্দ্রে মৃত্যু হয়েছিল কমপক্ষে ১০৪ জনের। গোটা ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’বলে তীব্র নিন্দা করেছিল প্যালেস্টাইন।
রয়টার্স সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার প্রথম ঘটনাটি ঘটে মধ্য গাজার আল-নাসেইরাত ক্যাম্পে। সেখানে ত্রাণ বিলির কাজ চলছিল। খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বহু মানুষ। প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অভিযোগ, সেসময় ক্যাম্পে আঘাত হানে ইজরায়েলের বিমানবাহিনী। এই হামলায় মৃত্যু হয় ৮ জনের। এদিন দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে উত্তর গাজায়। ত্রাণ বোঝাই ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ। এখানেও অভিযোগ, অপেক্ষারত মানুষদের উপর এলোপাথাড়ি গুলি চালায় ইজরায়েলি ফৌজ। প্রাণ হারান অন্তত ২১ জন। এই ঘটনায় আহতের সংখ্যা কমপক্ষে দেড়শো। যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই অভিযোগগুলো নস্যাৎ করে দিয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস। বিবৃতি দিয়ে আইডিএফের তরফে জানানো হয়েছে, ‘কোনও ত্রাণ শিবিরেই হামলা চালায়নি ইজরায়েলের সেনাবাহিনী। এই খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
উল্লেখ্য, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার মানুষদের একমাত্র ভরসা নানা দেশের পাঠানো ত্রাণ। মাঝে মাঝেই ট্রাক বোঝাই ত্রাণ এসে পৌঁছয় গাজার বিভিন্ন প্রান্তের আমজনতার কাছে। রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ট্রাক থেকে খাবার সংগ্রহের জন্য। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম গাজার নাবুলসি এলাকায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ইজরায়েলি সেনার গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১০৪ জন। আহতের সংখ্যা ছিল ৭০০রও বেশি। এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা কর্তা জানিয়েছিলেন, ত্রাণ বোঝাই ট্রাকটি সেনা ট্যাঙ্কের খুব কাছে এসে গিয়েছিল। তাই বিশাল মানুষের ভিড় দেখে ভয় পেয়েছিলেন সেনাকর্মীরা। আত্মরক্ষা করতেই বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছে ইজরায়েলি ফৌজ। যদিও প্রাথমিকভাবে ইজরায়েলের দাবি ছিল, ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি করে ত্রাণ নিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েছিলেন গাজার আমজনতা।
বলে রাখা ভালো, পাঁচ মাস পেরিয়ে জারি রয়েছে হামাস বনাম ইজরায়েল যুদ্ধ। হামস নিধনে ইজরায়েলি সেনার অভিযানে গোটা গাজায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থা। একমুঠো খাবার ও জলের জন্য এখন চারদিকে শুধুই হাহাকার। বিভিন্ন দেশের পাঠানো এই ত্রাণের ভরসাতেই এখন গাজার মানুষদের দিন কাটছে। এখন আকাশপথেও ত্রাণ পাঠাচ্ছে জর্ডান ও ফ্রান্স ও আমেরিকার মতো দেশ। জলপথেও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।