সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কমলকুমার মজুমদার লিখেছিলেন, 'আলো ক্রমে আসিতেছে...' ব্রহ্মাণ্ডের চলনের ক্ষেত্রেও আলোর সেই ক্রমবর্ধমান চরিত্রই যেন চোখে পড়ে। তবে তাকে দেখা গেলেও ধরা যায় না। অর্থাৎ স্পর্শ করা অসম্ভব। কিন্তু আলোকে সুপারসলিড রূপেই এবার নিয়ে এলেন বিজ্ঞানীরা।

ইহজগতে রয়েছে তিন ধরনের পদার্থ। তরল, গ্যাসীয়, কঠিন। কিন্তু আলো এর কোনওটিও নয়। যেন শুধু ফুটন্ত কণার স্রোত, শক্তি। যা প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছে এ প্রান্ত থেকে অপ্রান্ত। যার অবাধ চলাচল। সেই আলোকেই কিনা সুপার সলিড আকারে বেঁধে ফেলল বিজ্ঞানীরা! হ্যাঁ! ঠিকই পড়েছেন।আলোর সুপারসলিড অবস্থা! ইতালির বিজ্ঞানীরা এই বিপ্লব ঘটিয়েছেন। বিখ্যাত 'নেচার' পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রকাশ পেয়েছে। যার পরই হুলস্থূল বিজ্ঞানী মহলে।
বিষয়টি ঠিক কী? তার জন্য আগে জানতে হবে সুপারসলিড অবস্থা কী। কোনও পদার্থের অণুগুলিকে উচ্চচাপে এমন অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে পর্দাথটি তরলও নয়, আবার কঠিনও নয়। এই অবস্থায় পদার্থের অণুগুলি সর্বদা সচল থাকে।স্বাভাবিক ভাবেই মনে হতে পারে, সুপারসলিড অবস্থা পদার্থের হয়। সেখানে আলো একপ্রকারের শক্তি। তাহলে কী করে হল এই অসাধ্য সাধন?
এক্ষেত্রে ইটালির দুই বিজ্ঞানী আন্তোনিও জিয়ানফেট এবং ডেভিড নিগ্রো বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেট তত্ত্বকে কাজে লাগিয়েছেন। শূন্য ডিগ্রি তাপামাত্রায় আলো অণুকে ঘনীভূত করা হয়। সেই অবস্থায় আলোর কণাগুলি একত্রিত হতে শুরু করে। সেই থেকে সুপার সলিড অবস্থা। এই অবস্থায় আলোর ভিতরের অংশ তরলের মতো কিন্তু তরল নয়। ঠিক যেন থকথকে অবস্থা। তাহলে এবার কি আলোকে ছুঁয়ে দেখা যাবে? না সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে না। কারণ আলো শেষপর্যন্ত শক্তিই, যাকে সেই অর্থে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব নয়।