ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মণিপুর ইস্যুতে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিধানসভা। ফের বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় তুমুল হট্টগোল করতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। পালটা মমতা বলে দেন, “মণিপুর সামলাতে প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ।” পাশাপাশি মণিপুর নিয়ে বিধানসভায় নিন্দাপ্রস্তাব আনে তৃণমূল।
প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে এদিন মমতা বলেন, “তিনি বিদেশে যেতে পারেন, আর মণিপুরে যান না। এটা লজ্জা।” এরপরই যোগ করেন, “আপনারা মণিপুর শান্ত করতে না পারলে আমাদের দায়িত্ব দিন। আমরা বিজেপি নই যে, মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি করব। একটাই লক্ষ্য মণিপুরকে শান্ত করব। সবাই এগিয়ে আসুন। ডবল ইঞ্জিন সরকার মানুষকে যে তীব্র অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছেন, তাদের রক্ষা করুন।”
[আরও পড়ুন: ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, নওশাদ সিদ্দিকির ভাঙড়ে প্রবেশে রইল না বাধা]
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখেছিলাম। আমি জাতিদাঙ্গা বুঝি বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লিখেছিলাম যে, শান্তির কথা বলতে পারি। মণিপুর নিয়ে যারা বাধা দিচ্ছে তারা অ্যান্টি নর্থইস্টার্ন, অ্যান্টি পিপল, অ্যান্টি ডেমোক্রেসি। এরা দেশকে জ্বালাবে। আর নয় দরকার, বিজেপি সরকার, আর নেই দরকার সিভিল কোডের সরকার। মানুষ বলছে, আমি বলছি না। কতগুলো সংস্থা আমায় চিঠি দিয়ে পাঠিয়েছে। আমি বিধানসভায় টেবল করলাম। আমরা মণিপুরের পাশে থাকব।”
মণিপুর নিয়ে বিধানসভায় তৃণমূল নিন্দাপ্রস্তাব আনতেই সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনা সেই রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয়। অন্য রাজ্য নিয়ে আলোচনা করার অধিকার নেই এই রাজ্যের। এটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বিষয়। এ নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার অধিকার নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই আলোচনা হচ্ছে।’’ এরপরই তিনি দাবি করেন, “এই প্রস্তাবের সমালোচনা করছি। এই বিধানসভার নথি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাব।” যা শুনে ফুঁসে ওঠেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
শুভেন্দুকে বলে দেন, “এই মোশন পড়ে দেখেননি। আপনারা যদি তা অবৈধ মনে করেন, তাহলে এতে অংশ নিতেন না। আপনারা অংশ নিয়েছেন। তাই শুনতে হবে শুভেন্দুবাবু। শুধু কাগজ ছিড়লে হবে না।” একইসঙ্গে মমতাও বলেন, “ডোন্ট টক লাইক রাবিশ। শোনার ধৈর্য থাকা উচিত। আপনারা অধৈর্য হয়ে গিয়েছেন। গোটা দেশ জ্বলছে।” মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য শেষ হতেই বিধানসভায় ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। শেষে ধ্বনি ভোটে নিন্দাপ্রস্তাব পাশ হয় বিধানসভায়।